ফ্ল্যাপে লিখা কথা আমি বিষ খাচ্ছি অনন্ত, আমি বিষ খাচ্ছি । তু্ই একটু অপেক্ষা কর । বাইরে এমন চাঁদ, এমন জ্যোৎস্না, তোর বুঝি ভালো লাগছে না? কী যে ভালো লাগছে আমার! অনন্ত, তুই তার কিছুই জানলি নে, কিচ্ছু জানলি নে। বড় সুখ, বড় ব্যথা। আচ্ছা, তুই যে ফিরতে বলিস্ কোথা যাবি? ঘর কোথা? কোথা পাবি এরকম পল্লবিত বিষের ভান্ডার? কোথাও পাবি না। চলে যাস্ নে অনন্ত, শোন্, এই দ্যাখ আর মাত্র একটি গেলাস… আর মাত্র একটি চুমুক। এ-চুমুকে নেশা হবে, তারপর, তারপর, তারপর আমরা দু’জনে মিলে ফিরে যাবো। সত্যি ফিরে যাবো। ঘরে বুঝি খুব শান্তি? খুব ভালোবাসা? সেই ভালো, একটু তাড়াতাড়ি পা চালা অনন্ত; একটু তাড়াতাড়ি চল …।
সূচিপত্র আমি বিষ খাচ্ছি অনন্ত (আমি বিষ খাচ্ছি অনন্ত)০৭ খেলা (ধর্ম ও দেবীর মতো তুমি আসো, তুমি যাও)০৮ তোমার উড়াল (তোমাকে একটি পাখির উড়ে যাবার সঙ্গে)০৯ চাই জলপথে (স্থলপথে চাই না তোমাকে, চাই জলপথে)১০ ছলনা (হঠাৎ যদি হারিয়ে যাই)১১ গ্রহণ (ঘরের দেয়াল জুড়ে ছায়া ফেলে চাঁদের গ্রহণ)১২ অথচ কাঁটি না (গাছের নিষ্পত্র শাখা কেঁপে ওঠে জানি)১৩ রাতের উৎসব (জ্বালাও ধুম্রশিখা, এই অপাপবিদ্ধ রাতে)১৪ এই চৈত্রে তোমাকে ভুলিব (একন আকাশ জুড়ে একদল)১৫ ভালোবাসার পথ (ঐ রাস্তাটা খুব কি বড়ো)১৬ আমার অন্বিষ্ট প্রেম (একটি নতুন খেলা শিখে গেছি)১৭ তিতিক্ষা (অনন্তে অনীহা নেই, তবু এক ক্লান্তি ঘিরে রাখে)১৮ আবার একটা ফুঁ দিয়ে দাও(আবার একটা ফুঁ দিয়ে দাও)১৯ সময় (ফেলে আসা এমনি কোনো দিনে)২০ ভালোবাসা, ঘুমন্ত পাথর (যদি বিরহকে সত্য বলে মানি)২১ প্রতারণা (পা দুটো পদ্মের স্মৃদি, তা না হরে ময়ূর বলতাম)২২ এপিটাফ (করতলভরা এ্ই ম্লান রেখাগুলো তোমাদের জন্য)২৩ অভিমান (এত যে তুই মূল্য দাবি করিস)২৪ ভেনাস (মেয়েটি হেঁটে যাচ্ছে)২৫ একটি প্রেমের গল্প (ওরা দীর্ঘদিন আসতো দু’জনে মিলে)২৬ ফেরানো যায় নি (যায়া থাকলে ফেরানো যায়)২৭ তোমার দুটো অমৃতফল (আমি তো গেছিই, তুমিও যাবে)২৮ বদলে যাচ্ছি (আমি এখন অন্যরকম, আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছি)২৯ হাঁটছে স্বভাব (হাঁটছি কোথায়? কে বলেছে আমরা হাঁটছি?)৩১ মাকড়সা (আগুন জ্বালাতে চাই, অগ্নি নিভে যায়)৩২ পদ্ম-মৃত্যু (পদ্ম-ফোটানোর জন্য একটা পুকুর কেটেছিলাম)৩৩ শব্দ (শব্দ এখন হাঁটতে পারে, পথের মধ্যে রুখে দাঁড়ায়)৩৪ চন্দ্রাহত (একটু পরেই ভেঙে যাবে চাঁদ)৩৫ কবি (জল জমতে জমতে হবে জলাশয়)৩৬ বাংলাদেশ বিমান (‘আপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করছি’)৩৭ যদি পাই তিনটি পাথর (যদি পাই এটি পাথর কোনোদিন)৩৮ একজন স্তাবকের অপেক্ষায় (জন্মের সময় ঈশ্বরের সঙ্গে আমার)৩৯ দৃষ্টিগ্রাহ্য কছুই চাই না (আমিই তখন ভুল করেছি, ভুল বলেছি) ৪০ অক্ষমতা (কাগজ কলমের যুগল উপহাসের মেধ্য আমার কবিতাগুলো)৪১ ক্ষতির সুন্দর ঘ্রাণ (পকেট থেকে টাকা হারালে)৪২ আবেগ সংক্রান্ত কবিতা (আবেগকে বলি:সংযত থাক)৪৩ প্রতিদ্বন্দ্বী (তুমি জানারার পর্দা তুলে দিলে, সকালের আলো)৪৪ সাহস থেকে প্রেম (আমার শুধু ইচ্ছে করে সঙ্গে বসে থাকি।)৪৫ পাখা চাই (শরীর খুলবে কী করে, পাখা চাই।)৪৬ জানে মৌন মহাকাল (এই বৃষ্টি আমাকে দেবে না জলধারা) ৪৭ তোমার নাম লিখতে লিখাতে (এ পর্যন্ত তেত্রিশ কোটি বার)৪৮ কোন কাব্যে রাখি নি তোমাকে (দাঁড়ি, কমা, কোলনের মতো মিশে)৪৯ এককালীন কবি বন্ধুদের প্রতি (পেরিয়ে এসছি ক্রমে কবিতার)৫০ পুরোহিত (মাথার উপরে কালোচুলে কিছু লাল ফুল, কিছু দুর্বা)৫১ একটি কবিতা লেখা হবে (তোমার অবহেলা নিয়ে একটি কবিতা)৫২ আলো হাওয়ার রাজ্যে (আরো একটি জানালা খুলে দিতে মন চায়)৫৩ নিজের মুখে চুমু (কী ব্যাকুল আহ্বান ছিল, মনে পড়ে?)৫৪ অচেনা পাখির জন্য (বাড়ির পেছনের পুকুরে দুপুরের স্নান করতে)৫৫ না বলে যাবো না (না বলে যাবো না, মেঘ যেরকম আকাশকে)৫৬ এখনো (আমাদের একটি চুম্বন এখনো রাত্রির বুকে)৫৭ ঘাসের ঘটনা (রাতের আঁধার এস আমাদের প্রথিবীকে ঢেকে)৫৮ ঝিনুক (বড় হলে আর কী করতে হয়?)৫৯ তোমাতে আর আবদ্ধ নেই (তোমাতে আর আবদ্ধ নেই)৬০ বোষ্টমী (এত সাজানো গোছানো কেন, চলে যাবে না তো?)৬১ সেই আঁধারে (আলোটা নিভিয়ে দাও, তোমাকে পরান ভরে দেখি।)৬৩ রবিবার (আমাদের গভীর নদীতে হঠাৎ ভাসিয়ে দিয়ে গেলো)৬৪ হঠাৎ ঢাকার কথা (হৃদয় দিয়ে হৃদয় করে হৃদয়ে ভরে রাখা)৬৫ ময়মনসিংহ জং (‘তুমি কি যাবে না? তুমি কি যাবে না’?)৬৬ ঘরের বর্ণনা (মাঝখানে দুই ভাগ করে দুটো দুটো চারটে জানালা)৬৭ ছিন্নপত্র (১-৫) ৬৮ সমর্পণ (ছিলাম বনের পাখি হয়েছি খাঁচায় বাঁধা টিয়ে)৭১
জন্ম: জুন ২১, ১৯৪৫, আষাঢ় ৭, ১৩৫২ বঙ্গাব্দ, যিনি নির্মলেন্দু গুণ নামে ব্যাপক পরিচিত,তিনি একজন বাংলাদেশী কবি এবং চিত্রশিল্পী। কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য এবং ভ্রমণকাহিনীও লিখেছেন। তাঁর কবিতায় মূলত নারীপ্রেম, শ্রেণি-সংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধীতা, এ-বিষয়সমূহ প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রেমাংশুর রক্ত চাই প্রকাশিত হবার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এ-গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা হুলিয়া কবিতাটি ব্যাপক জরপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পরবর্তীতে এর উপর ভিত্তি করে তানভীর মোকাম্মেল একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও তাঁর স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতাটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমী , ২০০১ সালে একুশে পদক এবং ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।