এক প্রিন্স মানে যুবরাজ, কিন্তু দ্বারকানাথ ঠাকুর সেরকম প্রিন্স ছিলেন না। ঠাকুর পরিবারের রামলোচন বা অলকা দেবী রাজা-রানী ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন দ্বারকানাথের জেঠামশাই ও জেঠাইমা। তাঁর নিজের বাবা-মা ছিলেন রামমণি ও মেনকা দেবী। চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বারকানাথ ছিলেন সবচেয়ে ছোট। তাঁর জন্মের মাত্র এক বছর পরেই মা মারা যান। চারটি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, ঘরে তাদের মা নেই। রামমণি তখন দূর্গামণি দেবীকে বিয়ে করে ঘরে আনলেন। এদিকে জেঠামশাই রামলোচনের একটি মাত্র মেয়ে জন্মের কয়েক বছর পরই মারা যায়। তাঁর সংসার শূন্য। এমন সময়, একদিন তাঁদের বাড়িতে এলো এক সন্ন্যাসী ভিক্ষে করতে। সে শিশু দ্বারকানাথকে দেখে বলল, এই শিশুটি বড়ো হয়ে ধনে-মানে সংসারের শ্রীবৃদ্ধি ঘটাবে। সন্ন্যাসীর কথা শুনে অলকা দেবীর মন নেচে উঠল। তিনি স্বামীকে ধরলেন দ্বারকানাথকে দত্তক নেয়ার জন্য। তখন থেকেই দ্বারকানাথ তাঁদের সংসারেই প্রতিপালিত হতে থাকলেন। রামলোচন ঠাকুর পরিবারের পুরনো জমানার মধ্যে কিছুটা আধুনিকতার হাওয়া বাইয়ে দিয়েছিলেন। তখনকার দিনের রক্ষণশীল আবহাওয়ায় বিকেলে বাড়ির বাইরে হাওয়া খেতে যাওয়ার প্রথা তিনিই পরিবারে প্রথম চালু করেন। মাঝে মাঝে বাড়িতে বসাতেন কবিওয়ালা ও কালোয়াতদের মজলিশ। অনেক বিষয়-সম্পত্তি ও জমিদারিও কিনেছিলেন।
আনু মাহমুদ তরুণ অর্থনীতিবিদ, প্ৰবন্ধকার, কলাম লেখক ও গ্রন্থকার হিসেবে ইতোমধ্যে বেশ পরিচিতি অর্জন করে সুধী পাঠক সমাজে একটি স্থান আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও তিনি তার কর্মপরিসরে সরকারি কর্মকর্তা ও এ্যাডমিনেস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্য হিসেবে মোঃ মাহমুদুর রহমান নামেই সমধিক পরিচিত। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব এবং জাতীয় গ্ৰন্থকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। আনু মাহমুদ বেশ সময় ধরে লেখা-লেখির সাথে জড়িত রয়েছেন এবং অনেক চড়াই উৎরাই করে দীর্ঘ পথ পরিক্রমার মাধ্যমে পরিস্ফুটিত হয়েছেন গ্রন্থকারের বর্তমান অবস্থানে এবং সংগ্রহের ঝুলিতে অর্জন করেছেন আর্থ-সামাজিক সমস্যা সম্পর্কিতসহ বহু বিষয় ভিত্তিক গ্রন্থের সফলতা, যা ইতোমধ্যে পাঠক সমাজে বেশ সমাদৃতও হয়েছে। তাঁর লেখালেখির শুরু হয়েছে সেই ছাত্র অবস্থা থেকে, আর তা ক্ৰমান্বয়ে শিকড় গেড়ে পত্র পল্লবে শোভিত হয়ে শাখা বিস্তার করে বর্তমানে রূপ নিয়েছে কাণ্ডে, বৃক্ষে। কিন্তু তার প্রত্যাশা রয়েছে একে ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে এক বিরাট বটবৃক্ষের রূপ দেয়ার। লেখালেখির জগতে যেমন জড়িযে আছেন তেমনি আর্থ-সামাজিক সংগঠনের সাথে। তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা মাহমুদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তাদের দুই সন্তান চাঁদনি ও ইযু। তিনি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য, জনাব মজিবর রহমান তালুকদারের দ্বিতীয় সন্তান।