নকুড় মামাকে জাননা? তাকে দেখলেই হাসি পায়। বেঁটেখাটো মানুষটি। মাথাটা গোল, ভুঁড়িটিও গোল। আর স্বভাবটি কী সরল, যেন শিশু একটি। শুধু নাকের নীচে এক গোছা সাদা গোঁফ। আমাদের গ্রামে তখন শিশু-প্রদর্শনী হচ্ছে। ভাল স্বাস্থ্য, দেখতে সুন্দর এমন শিশুরা সবাই প্রাইজ পাচ্ছে। নকুড় মামা বললে, “দেখ, জীবনে এত কাজ করলুম একটা প্রাইজ পেলুম না। এখনকার দিনকালই আলাদা। ছুটলে প্রাইজ, লাফালে প্রাইজ, ‘তা না না না' করে গলা ছাড়লেই প্রাইজ। তা তোরা যদি...' নকুড় মামার ইচ্ছাটা অব্যক্ত থেকে যায়। মামা তখন অন্যদিক থেকে নিজেকে প্রকাশ করে, 'দ্যাখ, বার্ধক্যটা একরকমের শৈশবই বলতে হয়। লোকে বলে, বৃদ্ধ আর শিশু তফাত নেই। কি বলিস?” আমি মামার গোঁফের দিকে নির্দেশ করেই বললুম—‘তফাত শুধু ঐখানটায় যা।' ‘আরে ছোঃ’—মামা বলে ওঠে, 'ওটা ঢেকে নিতে কতক্ষণ! ওটা ঢেকেই ত কতবার হাফ টিকিটে রেলে চড়ে বেড়ালাম ।' যাই হোক, প্র্যামে তুলে নকুড় মামাকে নিয়ে যাই ঠেলে ঠেলে। প্রদর্শনীর গেট পেরিয়ে যতই এগুচ্ছি ততই ভিড় জমে যাচ্ছে নকুড় মামাকে দেখতে। মামার ধৈর্য অসাধারণ। তিনি নাকের নীচে অবধি চাদর ঢাকা দিয়ে রেখেছেন। মুখে বাক্য নেই। কিন্তু কতক্ষণ আর ধৈর্য ধরবেন, বিচারকের বিরুদ্ধে একবার রুখে উঠলেন আর গাড়ির ওপর দাঁড়িয়ে উঠেই ওজস্বিনী ভাষায় বক্তৃতা দিতে আরম্ভ করলেন। গোঁফের কথা তখন আর মনে ছিল না। আর তাই না দেখে কী হাসি সবার! এক বছরের বাচ্চারাও হেসে উঠলো।
দেব সাহিত্য কুটীর বাংলা সাহিত্যে অন্যতম প্রথম ও প্রধান প্রকাশনা সংস্থা৷ এই সংস্থার প্রতিষ্ঠা কাল ১৮৬০৷ দেব সাহিত্য কুটীর প্রকাশিত অভিধান এবং ধর্মগ্রন্থ প্রথম থেকেই সবজ্যিনপ্রিয়৷ এছাড়া শিশু ও কিশোর পাঠ্য নানা ধরনের বই, ইংরেজি ক্লাসিক্সের অনুবাদ এবং শারদীয়া বার্ষিকী প্রকাশে দেব সাহিত্য কুটীর অন্যতম প্রধান পথিকৃৎ৷ অধুনা রড়দের এবং ছোটদের জন্য নানা ধরনের গল্প সংকলন, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনি এবং কমিকসও প্রকাশ করে চলেছে এই সংস্থা৷ এই সঙ্গে রয়েছে ছোটদের জন্য অসাধারণ একটি মাসিক পত্রিকা শুকতারা যা ৭০ রৎসরেও সগৌরবে এগিয়ে চলেছে৷ আর ৫৮ বছর ধরে রড়দের মনোরঞ্জন করে চলেছে মাসিক নবকল্লোল পত্রিকা৷ ণ্ডণে মানে বাংলা প্রকাশনা শিল্পে দেব সাহিত্য কুটীরইঁ এখনও এক এবং অদ্বিভীয়৷