"অস্কার ওয়াইল্ডের সেরা রূপকথা"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: জীবন নয় যেন একটি নাটক! | উত্থান-পতন, চড়াই-উত্রাই, আনন্দ-বেদনার এক উপাখ্যান- কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম অস্কার ওয়াইল্ড। ইংরেজি সাহিত্যের বেগবান এক পুরুষ তিনি। তীক্ষ্ণ, মেধাবী, উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, দিব্যকান্ত সুপুরুষ, বাগ্মী অস্কার ওয়াইল্ড জন্মগ্রহণ করেছিলেন আয়ারল্যান্ডে ১৮৫৪ সালে, ১৫ অক্টোবর। অভিজাত, উচ্চবংশে তার জন্ম। বাবা-মা দুজনেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে খ্যাতিমান। ছাত্রজীবন গৌরবময়। অসাধারণ মেধা ও মননজাত এই প্রতিভা পড়তে গিয়েছিলেন অক্সফোর্ডে। তৎকালীন সমস্ত বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বন্ধুত্ব। এক আশ্চর্য সুন্দর জীবন। অক্সফোর্ডের জ্বলন্ত আগুন অস্কার ওয়াইল্ড। দীপ্যমান, অগ্ৰিক্ষরা বাক্যভাষণ। যেখানেই যান সমাদর জোটে, যে কোনাে মেধাবী আড্ডায় স্বমহিমায় ঝলসে ওঠেন। সেই। ছাত্রবয়সেই, ১৮৭৪ সালের দিকে, সাহিত্যরচনায় অস্কার ওয়াইল্ডের মনােনিবেশ। নিজের প্রতিভায় আস্থাবান। জানতেন, তিনি বিখ্যাত হবেন। লিখলেন কবিতা। দ্রুত সংস্করণ নিঃশেষিত হল। যে কোনাে সভায়, যে কোনাে আসরে অস্কার ওয়াইল্ড সবার কাঙ্ক্ষিত পুরুষ। নাটক এবং গল্প লিখেও আলােড়ন সৃষ্টি করলেন। বক্তা হিসেবেও খ্যাতির শীর্ষে তার আরােহণ। কিন্তু যে বইটি তাকে অতিদ্রুত বিশ্বখ্যাতি এনে দিল, সেটি একটি রূপকথার গল্প-সংকলন। দি হ্যাপি প্রিন্স অ্যান্ড আদার টেল। প্রকাশিত হল ১৮৮৮ সালে। খ্যাতির স্বর্ণসিংহাসনে বরণীয় হলেন। সাহিত্যের ইতিহাসে এ-ও আশ্চর্য এক ব্যতিক্রম। অস্কার ওয়াইল্ড সর্বস্ব উজাড় করে লেখালেখি শুরু করলেন। রাজকীয় তাঁর জীবনযাপন। বেশভূষা, চালচলন সবকিছুতেই ফুটে উঠল তৎকালীন সমাজের সেরা আভিজাত্য। অস্কার ওয়াইল্ডের যে কোনাে রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য শিল্পের জন্য শিল্প। সৌন্দর্য সৃষ্টি করে শিল্পকে। সাহিত্য সেই চিরমহত্তম মাধ্যম যা ধারণ করে জীবনের গাঢ় রহস্য এবং অপার সৌন্দর্য। কিন্তু তার রূপকথাগুলাে চিরনতুন অমর সৃষ্টি হল কেন? শিশু-কিশােরদের জন্য অস্কার ওয়াইল্ডের গল্প খুলে দেয় মায়াবী তােরণ। রূপক কল্পনার তীব্র উদ্ভাস গল্পের প্রতিটি ছত্রে ছত্রে। বয়স্ক পাঠকদের জন্য উন্মােচিত হয়
জন্ম ৭ই এপ্রিল ১৯৬৪, লালবাগ, ঢাকা । পিতা প্ৰয়াত সাইফুর রহমান। মাতা প্ৰয়াত আনজিরা খাতুন। পিতৃব্য প্রয়াত কবি হাবীবুর রহমান, খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিক । শিশুসাহিত্যের সকল শাখায় সমান স্বচ্ছন্দ। ২০০৬ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। সবচেয়ে কম বয়সে খামখেয়ালি ছড়াগ্রন্থের জন্য পেয়েছেন শিশু একাডেমী আয়োজিত অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার। পরে এই পুরস্কার পেয়েছেন আরও পাঁচবার । এ ছাড়াও পেয়েছেন সিকানন্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০০৩), পদক্ষেপ সাহিত্য পুরস্কার (২০০৫), ছােটদের পত্রিকা পুরস্কার (২০০৭), ছোটদের মেলা পুরস্কার (২০০৯/২০১০), জাতীয় ছড়া উৎসব। ২০১১ সম্মাননা, শামসুর রাহমান সাহিত্য পুরস্কার (২০১১) এবং ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল পুনর্মিলনী সম্মাননা। ২০১১ । কলকাতা থেকে অন্নদাশঙ্কর সাহিত্য পুরস্কার ২০১২। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। সবই শিশুসাহিত্য। দেশের খ্যাতিমান সকল প্রকাশনা সংস্থা থেকে এক বা একাধিক বই প্ৰকাশিত হয়েছে । দশ বছর সম্পাদক ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত কিশোর-তরুণদের উৎকর্ষধ্যমী মাসিক আসন্না-র । অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলার কিশোরদের পাতা সম্পাদনা করেছেন। পাঁচ বছর । বর্তমানে চ্যানেল আই-এর জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্বে কর্মরত। সাপ্তাহিক-এর প্রকাশকও তিনি। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির ফেলো, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থাপনা-সদস্য। প্রিয় শখ পুরোনো বই ও চিত্ৰকলা সংগ্ৰহ, বইপড়া, দাবাখেলা, রবীন্দ্রসংগীত শোনা ।