১৯৪৭ সাল। উপমহাদেশের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় সাল। কোটি কোটি মানুষে সীমানা পেরিয়ে চলে গেছে অপর এক সীমানায়। কোটি কোটি মানুষ আবার চলে এসেছে এই অচেনা সীমানায়। মানুষের এই অনর্থক আসা-যাওয়ার কারণ ভয়াবহ সাম্প্রদায়িকতা, নিষ্ঠুর রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা। কিন্তু সাধারণ মানুষ, তারা কি সাম্প্রদায়িক ছিল? এক কিশােরের স্মৃতিকাতরতার মধ্যে দিয়ে এই প্রশ্নটিরই উত্তর খুঁজেছেন শক্তিমান শিশুসাহিত্যক এখলাস উদ্দিন আহমদ। ছােট এক কিশাের তপু যখন আরাে ছােট ছিল তখন সে স্বপ্ন দেখত ঘরের বাইরে যাওয়ার। কিন্তু যে দিন সে ঘরের বাইরে গেলাে সেদিন সে কেবল তার ঘরই নয়, অতীতকেও ফেলে এলাে। অথচ সেই অতীত মানুষের সন্দেহ মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্প্রীতি, ভালােবাসা, সৌহার্দ্যের অতীত। সেই অতীতকে ছােট্ট তপু খুঁজে ফেরে। এবং একদিন তা খুঁজে পায় ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। সে তখন মুখােমুখি হয়, এই সত্যের - ‘কোন ধর্ম আর সম্প্রদায়ের ওপর ভিত্তি করে যে দেশের জন্ম সে দেশ কোন দিন টিকবে না, টিকতে পারে না; এখলাস উদ্দিন আহমদ তাঁর সহজত লেখনীতে ছােট ছােট ঘটমান চিত্রকল্পের মধ্যে দিয়ে নির্মান করেছেন এই সুন্দর, সহজ অথচ দীপ্ত; ঋজু কিশাের উপন্যাস। কৈশােরের নির্জতায় মানবিক উদ্ভাসন খুঁজে পাওয়ার জন্যে আমাদের বার বার ফিরে আসতে হবে এই উপন্যাসের কাছে।