সূচীপত্র প্রথম অধ্যায় বিষয় সৃজনের রহস্যাবলী রাসূলে করীম (ছঃ)এর সৃষ্টি রহস্য ফেরেশতাদের সৃষ্টি রহস্য আসমান ও অন্যান্য সৃষ্টি আরশ, কুরসী ও ফেরেশতা রাসূলুল্লাহ (ছঃ)এর জন্ম মানব জাতির পিতা হযরত আদম (আঃ)এর সৃষ্টি রহস্য আদম সৃষ্টি কৌশল আদম সৃষ্টির প্রথম কথা ইবলীস শয়তানের সৃষ্টি রহস্য মানব সৃষ্টির মূলকথা সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য কুদরতের সাক্ষ্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রয়ােজনীয়তা সামগ্রিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহভীতি রােগ-শােকে ধৈর্য ধারণ আধ্যাত্মিকতা ও প্রবৃত্তির তাড়না নফসের প্রভাব ও দুশমন শয়তান কর্মে শৈথিল্য ও উদাসীনতা মােনাফেকী ও খােদাবিমুখতা তওবা বা প্রত্যাবর্তন ভালবাসা ও অনুরাগ প্রেম-আসক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (ছঃ) এর আনুগত্য এবং ভালবাসা শয়তান ও তার শাস্তি আল্লাহ্র কালামের আমানত নামাযে খুশু খুযু সকাজের নির্দেশ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদান শয়তানকে শত্রুরূপে গ্রহণ আমানত ও তওবা স্নেহ-মমতা ও দয়ার্দ্রচিত্ততা নামাযে খুশু-খুযু গীবত (পরনিন্দা) ও চোগলখােরী যাকাতের বর্ণনা যেনা ব্যভিচার পিতা-মাতার হক ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার যাকাত ও কৃপণতা দুর্লোভ, দীর্ঘ আশা ও উচ্চাভিলাষ সর্বদা আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন এবং হারাম থেকে দূরে থাকা মৃত্যুর চিন্তা পার্থিব অপকারিতা এবং তার প্রতি বিমুখতা পার্থিব জগতের অপকারিতা অল্পে তুষ্টির কল্যাণ ও ফযীলত আল্লাহর দরবারে দরিদ্রের মর্যাদা ও দরিদ্রতার ফযীলত মৃত্যুর সৃষ্টি রহস্য দ্বিতীয় অধ্যায় বিষয় জান কবজের বর্ণনা সাধারণ লােকের জান কবজ জান্নাতীদের পরিসংখ্যান জান্নাতে প্রবেশের আগে জান্নাতের সৃষ্টি কৌশল ও নেয়ামত জান্নাতের হুর গেলমান জান্নাতের সুখ-সম্ভোগ দীদারে ইলাহী : আল্লাহর দর্শন আরেক পর্যায়ে দীদার দীদারে ইলাহী ও জান্নাতের বাজার জান্নাত অর্জনের মূল উপাদান পাপ কার্যাবলি যেসব কারণে জাহান্নামে যাওয়ার সম্ভাবনা শিরক মাতা-পিতার নাফরমানী করা নামায না পড়া বা নামায অবহেলা করা যাকাত আদায় না করা রােজাব্রত পালন না করা ফরয হওয়া সত্ত্বেও হজ্জ আদায় না করা সুদখাের এতীমের মাল আত্মসাৎ করা ব্যভিচার করা প্রসংগ কথা
বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ., সংক্ষেপে ইমাম গাজ্জালী ছিলেন একজন সুফিসাধক ও মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ, যিনি তাঁর দর্শন ও চিন্তাধারা বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর পারিবারিক ব্যবসা সুতা সংক্রান্ত হওয়ায়, সেখান থেকে তার নাম গাজ্জালী হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যেহেতু 'গাজ্জাল' শব্দের অর্থ সুতা। ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দে (হিজরি ৪৫০ সাল) ইমাম গাজ্জালী ইরানের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং এই তুস নগরীতেই তার শৈশবকাল ও শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি ইসলামের স্বর্ণযুগে জন্ম নেন, যে যুগে শিক্ষা, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে মুসলমানরা অনেক এগিয়ে গিয়েছিলো। একইসাথে বিস্তার লাভ করেছিলো পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনেরও। ইমাম গাজ্জালী এসকল বিষয়েই দীক্ষা লাভ করেন এবং বিশেষ করে ঐ যুগের বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ আলেম ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনির কাছ থেকে ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। মুসলিম দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, ফিকহশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী । জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থস্থান বাগদাদের সেরা বিদ্যাপীঠ নিযামিয়া মাদ্রাসায় তিনি অধ্যাপনা করেন। তিনি তৎকালীন বাদশাহর দরবারেও আসন লাভ করেন। তবে সুফিবাদ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়ে তীব্র আকর্ষণ থাকায় তিনি জ্ঞান আহরণের জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন ও নানা বিষয় সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান অর্জন করেন। ইমাম গাজ্জালী রহ. বই রচনার মাধ্যমে তাঁর অর্জিত এসকল জ্ঞান মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমূহ-তে তিনি আলোচনা করেছেন সুফিবাদ, ইসলামি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে, এবং তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চার শতাধিক। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'আসমাউল হুসনা', 'মিশকাতুল আনোয়ার', 'ফাতাওয়া', 'মিআর আল ইলম', 'হাকিকাতুর রুহু', 'দাকায়েকুল আখবার' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১১১১ খ্রিস্টাব্দে (৫০৫ হিজরি) তিনি নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে মৃত্যবরণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় একজন মনীষী।