অন্য ভুবনের ‘অন্য মানুষ’-এর জীবন, জীবিকা সমাজ ও সমস্যার বিচিত্র বর্ণময় অবস্থা প্রকাশ পেয়েছে। মূলস্রোতের মানুষেরা সমকামকে মানসিক বিকৃতি কিংবা শারীরিক অসুস্থতা বলে মনে করেন। তাই সমকাম সমাজের চোখে ঘৃণ্য। গ্রন্থটি ঠিক সেই জায়গাটিতেই আঘাত করেছে ১৩টি অধ্যায়ের মাধ্যমে। পৃথিবীর বিভিন্ন জনগােষ্ঠীর মধ্যে সমান্তরাল যৌনতার অবস্থান সম্পর্কে আলােকপাত করা হয়েছে। ব্রাজিলের হিজড়ে বা পুরুষ রূপান্তরকামী ‘ত্রাভেস্তি’ (Travasti) সমাজের গবেষণালব্ধ ফলটি এই গ্রন্থে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তােলা হয়েছে। দেশ-বিদেশের হিজড়ে ও অন্যান্য। যৌন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নৃতাত্ত্বিক ও পর্যটকদের লেখা জীবনচর্যার দৃষ্টান্তগুলি বর্ণনায় এসেছে। উল্লেখযােগ্য হল ওমানের জানিথ, সুদানের জার, মিশরের খাওয়াল, থাইল্যান্ডের কাথােই, চীন ও। তাইওয়ানের তংজি, ইন্দোনেশিয়ার ‘লুড়রুক’। বাংলা সাহিত্যেও এসেছে সমকাম প্রসঙ্গ। বিভিন্ন গল্প। উপন্যাসের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে। সমপ্রেমী মানসিকতার সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত ও সমপ্রেমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নানা সংস্কারের কথা। আফ্রিকার বহুদেশে নারীর যৌন সুখানুভূতির মূল কেন্দ্রস্থল ভগাঙ্কুর বা ক্লিটোরিস যা কেটে ফেলা হয়। পুরুষের যৌন লালসা মেটাবার যন্ত্র হিসাবে নারীর ব্যবহার। এই ফ্রেমওয়াকেই সমকামিতা বাঁধা পড়ে। এখানে বিষম যৌন মূল্য বােধ সংস্কার এমনকি যৌন ক্রিয়ার নানারূপের প্রতিফলন ঘটে।