‘বাংলার অগ্নিরথ' : পুড়ে খাক্ হল বাংলা ‘এই মুহূর্তে বাঙালি জীবনকে গোড়া ধরে নাড়া দেবার ক্ষমতা কোনও পুরুষের নেই। স্বপ্নদ্রষ্টা প্রতিবাদী বাঙালি পুরুষ ক্ষমতা লেহনে, সমঝোতা আপস আর ব্যক্তিগত স্বার্থপূরণের চোরাবালিতে ডুবে গেছে হয়তো। তসলিমার সাহিত্যের অন্তরবস্তুতে, মমতার রাজনীতির মন্ত্রে আছে বিশুদ্ধ বিপদ আবাহন।' লিখেছিল ‘দেশ’ পত্রিকা (২৭ নভেম্বর, ১৯৯৯)। পশ্চিমবাংলার তিনটি জেলার সীমান্ত সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তখন চলছে ভয়াবহ সন্ত্রাস। ঘর-বাড়িতে আগুন, বাস্তু থেকে উৎখাত, খেতে ফসল নষ্ট, সম্পত্তি লুট, জমি হরণ, অপহরণ, ধর্ষণ, জরিমানা, হিংস্র পদ্ধতিতে খুন,—এক কথায় মানবিকতা সভ্যতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে একদল দাগী অপরাধী ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সমাজবিরোধী। মানুষের সংগ্রাম ও সাধনাকে ধ্বংস করে মধ্যযুগীয় স্বৈরাচার ফেরাতে চায় ওরা। এই ‘ওরা’ দুটি রাজনৈতিক দলের ছায়াশ্রিত। ‘ওদের’ নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। ‘দেশ’ পত্রিকা তাঁকেই বলল ‘বাংলার অগ্নিরথ’। বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল তাঁর নাম। দুজনকেই ‘মহৎ’ বানিয়ে ব্যবসা করার সে কী হৃদয়হীন প্রয়াস। ঐ সংখ্যাতেই প্রাবন্ধিক সুদেষ্ণা চক্রবর্তী ইতিহাসের বহু বিখ্যাত নারী-ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তুলনা করে মমতার ‘মহত্ত্বের’ বিশিষ্টতা নির্ণয় করেছেন। বলেছেন, ‘মমতার ক্ষেত্রেও প্রধান হাতিয়ার ছিল জঙ্গি, বেপরোয়া, অনমনীয় মনোভাব। যে-কোনওভাবে, যে-কোনও মূল্যে শত্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া । প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মতো দুই-একজন বাঙালি তরুণী ৬০-৭০ বছর আগে পিস্তল হাতে ব্রিটিশ শত্রুর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, একথা সত্য। কিন্তু কোনও কোনও বিশেষ মুহূর্তের ঝাঁপ দেওয়া, আর সারা রাজনৈতিক জীবন ও কর্মসূচিকে জঙ্গি অভিমুখ দেওয়া এক নয়। জঙ্গি অভিমুখের নেতৃত্বও ক্ষমতার বিশেষত্ব।' লক্ষণীয়, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে মমতার ‘সংগ্রাম’কে সমার্থক করা হচ্ছে! প্রীতিলতার শত্রু ছিল ব্রিটিশ। মমতার শত্রু মানুষ। সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে তাঁর