ভিয়েনা ওপেন চেস টুর্ণামেন্টে যাওয়ার পেছনে দুটা কারণ ছিলো ফারিনার। এক নম্বর, গ্রান্ডমাস্টারের তৃতীয় নর্মটা পাবার চেষ্টা করা। দুই নম্বর, আরিথার সাথে খেলবার সুযোগ পাওয়া। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে টপাটপ দুটো নর্ম পেয়ে সবাইকে বেশ তাক লাগিয়ে দিয়েছে ফারিনা। এই টুর্নামেন্টে ভালো করতে পারলে দাবার ইতিহাসে সবচেয়ে অল্প বয়স্ক মেয়ে গ্রান্ডমাস্টার হবার কৃতিত্ব অর্জন করতে পারবে সে। কিন্তু সেই কৃতিত্বের চেয়ে আরিথা নামের এক রহস্যময়ী মেয়ের সাথে খেলতে পারবার সম্ভাবনাতেই ফারিনা যেন বেশী উত্তেজিত। মাত্র দু'বছর আগে হঠাৎ করেই দাবার জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে আরিথা। পুরুষদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে সে ইতিমধ্যেই দু-তিনবার হারিয়েছে। অসম্ভব ক্ষমতাবান কম্পিউটার চেস মেশিনদেরকে একের পর এক অবলীলাক্রমে হারিয়েছে সে। দাবা বিশেষজ্ঞদের মতে আরিথার ফিদে দাবা রেটিং ৩৩০০-র উপরে হবে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের রেটিং মাত্র ২৮০০ তে। কিন্তু, হ্যাঁ এখানে বিশাল এক যতি চিহ্নের মতো একটা কিন্তু - আছে। আরিথা সশরীরে কখনো কোন টুর্ণামেন্টে খেলেনি। সুদূর কোন গোপন স্থান থেকে একমাত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে সে খেলে থাকে। যে কারণে তার কোন প্রকৃত রেটিং নেই কিংবা গ্রান্ডমাস্টার পদবীও নেই। যতদূর জানা যায়,
জন্ম খুলনা শহরে। বর্ণাঢ্য শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে শহরে-গ্রামে, দেশে-বিদেশে। বন্দী সৈনিক পিতার (ক্যাপ্টেন ডাক্তার) সঙ্গী হয়ে। তল্কালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বন্দী শিবিরে কেটেছে বাল্যকালের বেশ কিছুটা সময়। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন মেধাবী ছাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এপ্লায়েড ফিজিক্স ও ইলেকট্রনিক্সে কৃতিত্বের সঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান উচ্চ শিক্ষার্থে। ওকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, মিশিগান থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে এম.এস শেষ করে উত্তর আমেরিকাতেই কম্পিউটার পেশায় জড়িয়ে পড়েন এবং কানাডায় স্থায়ী নিবাস গেড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে তিনি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং এখন কর্মব্যবস্থতার মধ্যেও তা সাফল্যের সঙ্গে ধরে রেখেছেন। নব্বই দশকে প্রকাশিত তার সুখপাঠ্য পেপারব্যাক উপন্যাসগুলাে সহজেই সকল বয়সী পাঠকের হৃদয় জয় করেছিলাে। তার পেপারব্যাক উপন্যাসগুলো নতুন আঙ্গিকে শােভন মুদ্রণে প্রকাশিত হচ্ছে ।