"বাঙালির উৎসবের রান্না" বইটির আমার কথা-অংশ থেকে নেয়াঃ বাঙালি জীবনে নাকি উৎসবের অভাব নেই। অনেকেই বলে থাকেন, বাঙালির বারাে মাসে তের পান। আর এই তের পার্বনের রয়েছে তের রকমের উৎসবের আমেজ। এসব আমেজকে আরও মধুর ও উপভােগ্য করে তুলতে সহায়তা করে ঠিক সময়ের ঠিক খাবারটি। যেমন বৈশাখের সকালে আপনি কখনই চিকেন বার্গার বা স্যাণ্ডউইচ খেতে চাইবেন না। বরং সারা বছর যেটা কখনও খাননি সেই পান্তা ইলিশ খেতে খেতে তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন। আবার ঈদের দিনে নিশ্চয় পেঁয়াজু, বুট, পাকোড়া খাবার বদলে একটু রিচ ফুড খেতে চান সবাই। ইফতারিতেও তার ব্যতিক্রম নেই। বরং ইফতারিতে সকলের আগে জায়গা দখল করে আছে বিভিন্ন ধরনের ভাজাভুজি আর কাবাবের পসরা। শবেবরাতে তাে স্পেশ্যাল ডিস হালুয়া আর রুটি। জন্মদিনে যেমন রয়েছে কেক আর পেস্ট্রি, কিংবা বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুডের সমাহার। এছাড়া, দাওয়াতী রান্না তাে আছেই। ঘরে মেহমান আসার যেমন কমতি নেই, ঠিক তেমনই কমতি নেই তাদের আপ্যায়নের জন্য প্রয়ােজনীয় খাবারটি রান্না করার উপকরণের। এই বইতে বাঙালির এসব বিশেষ বিশেষ উৎসবের রান্নাগুলােকে বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে তুলে ধরা হয়েছে। বইটি লেখার সময় ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। নির্ভর করতে হয়েছে টেলিভিশনে প্রচারিত বিভিন্ন রান্নার আইটেমের উপরও। সর্বোপরী বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত রান্নাগুলাে থেকে বেছে নেয়া হয়েছে সঠিক সময়ের সঠিক রান্নাটি। তারপর যাচাই বাছাই ও উপযুক্ত সম্পাদনার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে এই বইতে। বইটি লেখার সময় উপরােক্ত সকল সহযােগিতার কারণে আমি তাদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ ও ঋণী। তবে রান্নাগুলাে শুধু কপি এবং পেস্ট করা নয়। বরং নিজের কিছু আবিস্কৃত ও স্বীকৃত তথ্যাবলী সংযােজন করা হয়েছে। রান্নাগুলাের প্রায় প্রতিটি পদ রান্না করে সাক্ষাৎ রসনা তৃপ্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সুতরাং আশা করা যাচ্ছে, এই বইটি উৎসবপ্রিয় বাঙালি সমাজে সাদরে গ্রহণযােগ্য হবে। পরিশেষে বইটি সকলের উপকারে লাগলেই আমার সকল শ্রম সার্থক হবে।