ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা কবি অমিয় চক্রবর্তী আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম পথিকৃৎ। আধুনিক কবিতার সঙ্গে তিরিশের দশক এবং বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, জীবনানন্দ দাশ ও বিষ্ণু দে’র সঙ্গে কবি অমিয় চক্রবর্তীর নাম অবিনাশী বন্ধন ও সমসাময়িকতার বিস্ময়ে জড়িয়ে আছে। মূলত কবি হলেও এঁরা পাঁচজনই গদ্যচর্চা করেছেন; এবং সৌভাগ্যের কথা বাংলা প্রবন্ধসাহিত্যে এঁদের অবদান খুবই উল্লেখযোগ্য। তাঁর প্রবন্ধ সংকলন সাম্প্রতিক প্রথম মুদ্রিত হয় ১৯৬৪ সালে, এবং এর কোন দ্বিতীয় সংস্করণ হয়নি আজ। বইটি দীর্ঘকাল যাবৎ আর বাজারে নেই। এই প্রেক্ষাপটে অমিয় চক্রবর্তীর শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধগ্রন্থটি প্রকাশ করা হলো। এ-প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে যে, আগে আমরা জীবনানন্দ দাশের প্রবন্ধ-সমগ্র প্রকাশ করে দীর্ঘকালের একটি শূন্যতা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আশা করি বাংলা গদ্যের পাঠক এবং ছাত্রদের দীর্ঘদিনের অনুচ্চারিত আর একটি আশা এ-গ্রন্থটি মেটাতে সক্ষম হবে। কবি অমিয় চক্রবর্তী সমসাময়িক শিল্প-সাহিত্য, রবীন্দ্র-রচনা ও বিশ্ব সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য কীর্তিমান কবি-লেখক এবং কোনো-কোনো ক্ষেত্রে সামাজিক সমস্যা তাঁর প্রবন্ধ-নিবন্ধের বিশ্বসাহিত্যের প্রতি লেখকের গভীর আগ্রহ ও পরিশ্রমী মননশীলতা পরিস্কুট হয়ে ওঠে। মূলত কবি হলেও সৃজনশলি গদ্যশিল্প অমিয় চক্রবর্তী ত্রিশোত্তর বাংলা গদ্যসাহিত্য একটি বিশিষ্ট রীতির প্রবর্তন করেন। দৃষ্টিভঙ্গির অনন্যসাধারণতার জন্যে তাঁর প্রবন্ধসমূহ বিশেষভাবে উপভোগ্য। ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর নির্বাচনে এ-গ্রন্থটি প্রতিনিধিত্বশীল হয়ে উঠেছে বলেই আমাদের বিশ্বাস। সূচিপত্র *শিল্পদৃষ্টি *কাব্যে ধারণাশক্তি *কাব্যের টেকনিক *কাব্যাদর্শ *সমালোচকের জল্পনা *বৃষ্টি : সমালোচনার প্রভ্যুত্তর *এজরা পাউণ্ড-কবিতার দরবারে পত্রাঘাত *এলিয়টের নতুন কবিতা *কবি য়েটস্ *জয়েস প্রাসঙ্গিক *প্রমথ চৌধুরীর গল্প *নতুন কবিতা *কবিতার চেয়ে বেশী *গানের গান *গীতাঞ্জলি ও সত্য-কবিতা *শেষ লেখা *যুগ সংকটের কবি ইকবাল *ইকবাল-কাব্যের নতুন প্রসঙ্গ
জন্ম: ৩ জুন, ১৯৫৯, বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ ও সাহিত্যিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও, তিনি অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা ও অপারেশানস্ও বিজনেস রিসার্চ ইত্যাদি বিষয়ের অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৮১ স্নাতক ও ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯৭ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে অধ্যয়ন করেছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি কিছু সময়ের জন্য পাবলিক পলিসি অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচ) যোগ দেন। অতঃপর সরকারের কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও আংকটাডের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিনি কূটনৈতিক পদে বেলজিয়াম, সুইজারল্যাণ্ড ও লুক্সেমবুর্গ এ দায়িত্ব পাল করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় কার্যরত রয়েছেন। সাহিত্য গবেষণা তাঁর প্রিয় ক্ষেত্র। তিনি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ও অন্যান্য রচনা নিয়ে প্রায় তিন দশক যাবৎ গবেষণা করে চলেছেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি জীবনানন্দ দাশের স্বহস্তে লিখিত পাণ্ডুলিপির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের সঠিক পাঠ নিরূপণ করেছেন। বিশেষ করে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের বর্জিত অংশ পুনরূদ্ধার করেছেন ও সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত শব্দাবলী বর্জন করে বিশুদ্ধ পাঠ তৈরী করেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা প্রতিবেদন ‘চটি সাহিত্যের পূর্ব পশ্চিম’। বর্তমানে তিনি বাংলা সাহিত্যের অভিধানে অসংকলিত শব্দ নিয়ে গবেষণা করছেন।