"যাকাত আপনারও ফরয হতে পারে" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: যাকাত ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন (ভিত্তি) তা সর্ব সাধারণের মাঝে তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি যাকাত সম্পর্কে কুরআন-হাদীসে বিশেষ গুরুত্ব। আরােপ করে অসংখ্য আলােচনা থাকা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে আমাদের গভীর আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আমাদের মনােভাব, এ ইবাদত থেকে কৌশলে এড়িয়ে চলা যায় কিনা, সম্পদের হিসাব-নিকাশের তােয়াক্কা না করে বলে দেই, আমার যাকাত হবে না। অথবা, কী আর হিসাব করবাে, মুক্তা কিছু দিয়েছি ইত্যাদি। এভাবে সমাজে যাকাতের ফরযিয়াতের গুরুত্ব তাচ্ছিল্যে পরিণত হয়েছে। যাকাত থেকে কোনােভাবে রেহাই পাওয়া যায় কি না- এ ধারণা আজ। আমাদের মাঝে বেশি কাজ করছে। তাই যাকাতের বিষয় আলােচনায় আসলে দেখা যায় যে, এক শ্রেণীর মানুষ এটাকে উপেক্ষা করার মানসিকতা দেখায়। আমরা নামায, রােযা যেমন আন্তরিকতার সাথে আদায় করি, নফলের চেয়ে ফরযের যেমন বেশি গুরুত্ব দেই তেমনি ফরয যাকাতের প্রতি আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। এক রাকাত ফরয নামাযের চেয়ে যেমন হাজার রাকাত নফল নামায উত্তম নয়, তেমনি এক টাকা ফরয যাকাত না দিয়ে হাজার টাকা নফল দানের মাধ্যমে ফরয আদায়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া যাবে না। আমরা জানি, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এখানকার কৃষিজমিতে আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য ধানসহ হরেক রকম ফসল উৎপন্ন হয়। আমাদের ফসল ঘরে তােলার সময়ে পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব’। যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থার মাধ্যমে ইসলাম বঞ্চিত ও সহায়-সম্বলহীন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। উৎপন্ন ফসলের উশর (যাকাত) একটি ফরয ইবাদাত। গ্রন্থে একটি ফরয ইবাদাত হিসেবে উশর সম্পর্কে কুরআন-হাদীসের দলীল ও আইম্মায়ে কেরামের অভিমতসহ আলােচনা করা হয়েছে। এতে খুঁটি-নাটি বিষয়ে ইমামগণের দ্বিমতের যুক্তিপূর্ণ সমাধান দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা যদি আমাদের নবান্ন উৎসবের সময়েই উশরের অংশটুকু (উৎপন্ন ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ, সেচের জমিতে উৎপন্ন ফসলের বিশ ভাগের এক ভাগ) পৃথক করে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত খাতে প্রদান করি তাহলে আমাদের উৎসবে বঞ্চিত অসহায় মানুষগুলােও অংশগ্রহণ করতে পারে। বুদ্ধিমান লােকদের জন্য সময় থাকতে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাই গা-ছাড়া মানসিকতা পরিহার করে নিজের সম্পদের হিসাব নিজে করুন। যাকাত ফরয হলে তা আদায় করুন। আল্লাহর মাল আল্লাহকে বুঝিয়ে দিন। তিনি আপনার সম্পদে বরকত দেবেন।