গল্প বলা, চরিত্র রূপায়ন আর কল্পনার বিন্যাস সমৃদ্ধ অট্টহাসি ও বিস্মরণের বই এমনই একটি উপন্যাস যা ১৯৭০ সালের শেষ ভাগে মিলান কুণ্ডেরাকে তার প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য এনে দেয়। তার সমস্ত কাজের মতােই ইতিহাস সংশ্লিষ্টতার চেয়েও বইটি অনেক বেশি মূল্যবান। সাতটি চমৎকার সামঞ্জস্যপূর্ণ অংশে মানব অস্তিত্বের বিভিন্ন দিক বিবর্ধিত ও পরিবর্তিত করা হয়েছে, পূনর্বিন্যস্ত ও শক্তিশালী করা হয়েছে, নতুনভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা, বিশ্লেষন এবং অনুভব করা হয়েছে। এক ধরনের চমৎকার জীবন-নিবীড়-শিল্পের এক আধুনিক বক্রাঘাতে কুণ্ডেরা যখন চেকোশ্লাভাকিয়া নিয়ে কথা বলছিলেন তখন মনে হয়েছিল তিনি সেই দেশটি নিয়ে লিখতে চলেছেন, ধন্যবাদ দিতে চলেছেন সর্বশেষ রাজনৈতিক সংজ্ঞাটিকে, কিন্তু একটু পরেই ঠিক তা আর মনে হয় না। এই ধরনের উধাও হয়ে যাওয়া আর পূনরাবির্ভূত হওয়াই হলাে সেই বিষয়টি কুণ্ডেরা যেটা তাঁর অট্টহাসি ও বিস্মরণের বই-এর মাঝে খুঁজে বেড়িয়েছেন। বহুস্তর বিশিষ্ট এই কাজে কখনাে উপন্যাস, কখনাে আত্মজীবনী, কখনাে দার্শনিক গবেষনা- কুণ্ডেরা জীবন, সঙ্গীত, যৌনতা দর্শন, সাহিত্য আর রাজনীতি নিয়ে এমনই এক ধারার আলােচনা করেন যেটা কদাচিৎ রাজনৈতিকভাবে সঠিক, কখনাে বিন্যাসােপযােগী নয় কিন্তু সবসময়ই মৌলিক, উপভােগ্য এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে চমৎকার।