'নবান্ন' নাটকের প্রথম অভিনয় 'খুব সম্ভবত' ২৪ অক্টোবর, ১৯৪৪ শ্রীরঙ্গম রঙ্গমঞ্চে।১ 'নবান্ন' প্রযোজনার প্রথম সমালোচকদের মধ্যে অনেকেই উপলব্ধি করেছিলেন, 'নবান্ন' কোথায় তৎকালীন প্রচলিত নাট্যধারা পরিহার করে অন্য পথে গেছে। তাঁরা উপলব্ধি করেছিলেন, (১) 'সমস্ত জুড়ে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। একজন নায়ক বা একজন অভিনেতাকে কেন্দ্র করে আর নাটক ও নাট্যকলা আবর্তিত হয় না।' (২) 'রবীন্দ্রনাথ থেকে শিশিরকুমার পর্যন্ত অতিরিক্ত বাচনের ব্যক্তিকেন্দ্রিক অভিনয়কলার পরিচয় রেখে গেছেন। এবার এই প্রথম দেখলাম অভিনয়ে, সংগীতে, সমস্ত জুড়ে একটি ঐক রীতির প্রয়োগ-সমগ্রের সম- বিকাশ।' (৩) 'কি নাট্যকলায়, কি অভিনয়ে, কি মঞ্চসজ্জায় দেখলাম এক বাস্তবতা, জীবনমুখীনতা।... আগেকার যুগের চমক, চটক ও রোমান্স্-এর স্থানে এসেছে সহজ বলিষ্ঠ জীবন।... বাংলা নাট্যকলা বাঙালি জীবনের দিকে এগিয়ে আসতে চাইছে।'২ ৪) 'মনে হয় এর প্রত্যেকটি দৃশ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রত্যেকটি দৃশ্য শেষ হচ্ছে একটা চরম আবহাওয়ায় এসে। ১৯৪২ থেকে ৪৪ সাল পর্যন্ত যে বিভিন্ন বিপর্যয় নেমে এসেছে গ্রাম-বাংলার জনজীবনে-তার প্রত্যেকটিকে দেখানো হয়েছে যেন বিচ্ছিন্ন করে করে। গণজীবনের বিরাট এক গোষ্ঠী নিয়ে এর পরিকল্পনা, তাতে কিন্তু এইটে আসাই স্বাভাবিক। এবং গত তিন বছরের বিভিন্ন বিপর্যয়ে তারা কেউ কারুর চেয়ে খাটো নয়। যার ফলে বিভিন্ন বিপর্যয় সমন্বিত দশ্যগুলি সম্পর্ণ হয়ে উঠেছে।