রবীন্দ্রনাথের জায়া ও জননী একটি অভিনব গবেষণাগ্রন্থ। সংসারের রবীন্দ্রনাথ, স্বামী ও পুত্র রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এই আকর্ষণীয় গবেষণা করলেন ভিন্নধারার কথাশিল্পী সাদ কামালী। সারদা দেবীর মৃত্যু হয়েছে দেড়শতাধিক বছর, পুত্র রবির বয়সও এখন দেড়শ ছাড়িয়েছে, তবু বিখ্যাত এই পুত্র ও মাকে ঘিরে কিছু নিন্দাবচন, সুযোগ পেলে কটা করতে ছাড়েন না অনেকে। স্ত্রী মৃণালিনীকে নিয়েও রবীন্দ্রনাথের ওপর দোষ চাপাতে লোকের অভাব হয় না। এমন প্রোপটে স্বতন্ত্র ধারার গল্পলেখক সাদ কামালী আবিষ্কার করলেন দুটি আসমানি পত্র। মহাকালের অনন্ত যাত্রাপথ থেকে জননী সারদা ও স্ত্রী মৃণালিনীর রবীন্দ্রনাথকে লেখা ওই পত্র দুটিতে জানালেন তাদের মনের সত্য উপলব্ধিটুকু। অন্যদিকে প্রাচীন ভারতের প্রেম পূজা বিরহ আশা ও আশাভঙ্গের কাহিনি, রাজনীতির কাহিনি নিয়ে রচিত মহাকাব্যের সমুদ্র থেকে ক্ষুদ্র আখ্যান বা আখ্যানের আভাস নিয়ে রবীন্দ্রনাথ যে স্মরণীয় কাব্য-নাটকগুলো লিখেছেন, এবং নানা প্রবন্ধে মহাকাব্য ও পুরাণ বিষয়ে উপলব্ধির প্রকাশ করেছেন তার সমূহ আলোচনা করতে যেয়ে গল্পপ্রবন্ধ গ্রন্থের লেখক সাদ কামালী প্রবন্ধ সাহিত্যে নতুন এক নিরীক্ষার নিদর্শন দেখালেন। রবীন্দ্র গবেষণায় নতুন এই গ্রন্থটি বিশেষ একটি ধারার পথিকৃৎ হয়ে উঠবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
সাদ কামালীর জন্ম ফরিদপুরে ১৯৬২ সালে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯২-তে প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘অবশেষে নিঃশব্দ অন্তিমে' প্রকাশিত হয় অভিব্যক্তিবাদী গল্প’ (১৯৯৫), উপকথার আপেল' (১৯৯৬), ‘আগুনের গ্রহণ’ (২০০০) এবং প্রথম উপন্যাস ‘রাষ্ট্রের সংক্রাম’-এর স্বীকৃতি মিলে কাগজ কথাসাহিত্য পুরস্কারের মাধ্যমে প্রকাশ পায় ২০০২ সালে। লেখালেখির শুরু থেকেই সাদ কামালী তার গদ্যের ভাষা, আঙ্গিক এবং বিষয় বৈচিত্রের জন্য আলােচিত।