"তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা (পেপারব্যাক সংস্করণ)"বইটির ভূমিকা: ২০০৬ সালের ২ জানুয়ারি এই বইটি লেখা শুরু করেছিলাম উত্তর আমেরিকায়, যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড স্টেটের, সিলভার স্প্রিং-এর বাসভবনে। মধ্য আমেরিকার সৌন্দর্যস্নাত কোস্তারিকা রাষ্ট্রের চির সবুজ সুউচ্চ পর্বতমালার ধ্যানমগ্ন দৃশ্য, প্রশান্ত ও অতলান্তিকের অবিশ্রান্ত সংগীতময় সংলাপ এবং আকাশের সীমাহীনতায় উজ্জ্বল লাল, নীল, হলুদ, সবুজের জমকালাে রঙিন ডানা মেলা টুকান, ম্যাকও এবং অজস্র পাখির আনন্দময় আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে এই বইটি সমাপ্তি লাভ করে। বইটি সময়ানুক্রমিকভাবে শুরু করেছি ষাটের দশকের শুরুতে আমার জন্মকাল হতে এবং শেষ করেছি ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাস আব্দুর অনন্তলােক যাত্রায়। আজকের ও আগামীর তরুণ যখন বইটি পড়বে তখন সে হয়তাে এর মধ্য খুঁজে পাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এমন এক ব্যতিক্রমধর্মী, মৌলিক চিন্তাশীল, বিস্ময়কর রকমের ন্যায়নিষ্ঠ, দুর্দান্ত রকমের সত্যপ্রিয়, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, নিরহংকার, আত্মপ্রচার বিমুখ ও স্বাধীন চেতা মানুষকে যার নির্মল জীবনাদর্শকে অনুসরণের মধ্যে শান্তি ও ন্যায়ের সুকঠিন পথটি নির্মাণ করা সম্ভব। বাংলাদেশ একদিন তার নিজস্ব প্রয়ােজনেই খুঁজে বের করবে তাজউদ্দীন আহমদকে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে গাজীপুরবাসীদের তাজউদ্দীন আহমদকে দেওয়া বঙ্গতাজ উপাধিটি নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেবে এক নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমিকের সুদক্ষ নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের অমর ইতিহাস।
তাজউদ্দীন আহমদ ও সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের জ্যৈষ্ঠ কন্যা শারমিন আহমদের জন্ম ঢাকা শহরে। ১৯৮৪ সাল থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী। তিনি ১৯৯০ সালে ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেলোশিপ ও উইমেন্স স্টাডিজ ল্কলারস অ্যাওয়ার্ডসহ উইমেন্স সন্টাডিজে মাস্টার অব আর্টস ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি শিশু শিক্ষার ওপরেও মাসটার্স কোর্স সম্পন্ন করেন। বিশ্বের পেশাজীবী নারীদের অন্যতম বৃহত্তম মানব উন্নয়ন সংগঠন দ্য সোরপটিমিস্ট ইন্টারন্যাশনাল অব দ্য আমেরিকাস, ওয়াশিংটন ডিসি, “আন্তর্জাতিক শুভেচ্ছা ও পারস্পরিক সমঝোতা রচনার ক্ষেত্রে ডিস্টিংশন” অ্যাওয়ার্ড প্ৰদান করে। স্কুলের জন্য কাউনটির মিডিয়া বিশেষজ্ঞ তার প্রথম প্রকাশিত দ্বিভাষিক বই হৃদয়ে রংধনু-দ্য রেইনবো ইন এ হার্ট কে মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ আর্টস কারিকুলামের জন্য উচ্চ অনুমোদনসহ বইটিকে “অসামান্য” ও “ভাল সম্পদ” অভিহিত করেন। সমাজে বিশেষত শিশুকিশোরদের মধ্যে শান্তি শিক্ষা প্রসারের মাধ্যম হিসেবে বইটি বর্তমানে নৃত্যনাট্যে রূপান্তরিত হয়েছে যার নাট্য সংলাপ রচনা এবং সহপ্ৰযোজনা তিনি করেছেন। এই নৃত্যনাট্যটি, ম্যারল্যান্ডের অভিজাত এফ. স্কট ফিটজজেরাল্ড থিয়েটার ও বাংলাদেশের জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীতে মঞ্চস্থ হয়ে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে।