বাংলাদেশ ও ভারত এই দুটি দেশের সীমান্তের ঠিক মাঝখানে যে কয়েক গজ ভূমি তা নোম্যান্স্ ল্যান্ড। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই নিকটতম প্রতিবেশীর সীমান্তের সঙ্গে এরকম ভূমি রয়েছে। যে ভূমির মালিকানা কোনো দেশই দাবি করতে পারে না। বাংলাদেশের দক্ষিণ দিকের বঙ্গোপসাগর বাদ দিলে পুরো দেশটির তিন দিক জুড়ে রয়েছে ভারতের সীমান্ত, হাজার হাজার কিলোমিটার নোম্যান্স্ ল্যান্ড। ভারতবর্ষের সাহায্য- - সহযোগিতায় একাত্তর সনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও বিগত ছত্রিশ বছরে দেশ দুটির সঙ্গে সুসম্পর্ক কখনোই স্থায়ী হয়নি। দুটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থায়ী না হলে দেশ দুটির সাধারণ মানুষের নানা ভোগান্তি যে হবে—তা বলা বাহুল্যমাত্র। কোচবিহার সীমান্তের নোম্যান্স্ ল্যান্ডে বাংলাদেশের কিছু সাধারণ নাগরিকের এ রকম ভোগান্তিকে কেন্দ্র করে সালাম আজাদের ‘নোম্যান্স্ ল্যান্ড' গল্পটি লেখা। গ্রন্থের অপর দশটি গল্পের প্লট ভিন্ন হলেও চিত্র যে খুব আলাদা তা নয়। ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিকদের যে ধারাবাহিক ভোগান্তি চলে আসছে তা ঐতিহাসিক সত্য। সাতচল্লিশের দেশ-ভাগের পরে সেই ভোগান্তি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে, পাচ্ছে। বাহান্নর ভাষা- আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ—বাংলাদেশের হিন্দুদের ভোগান্তি কোনোভাবেই লাঘব করতে পারেনি। যদিও তা ছিল বাঙালির স্বাধিকারের আন্দোলন ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিজয়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো দেশই নাগরিকদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে পারে না। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠে, দেশটি ক্রমান্বয়ে মৌলবাদীর দেশে পরিণত হচ্ছে।
সালাম আজাদ তাঁর ‘নোম্যান্স্ ল্যান্ড’ গ্রন্থে সেই চিত্রই তুলে ধরার প্রয়াস করেছেন।
লেখক, মানবাধিকার কর্মী, সালাম আজাদের জন্ম ১০-ই জুলাই ১৯৬৪ বিক্রমপুরের দামলা গ্রামে । গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস মিলে তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা ৪৯ টি । CONTRIBUTION OF INDIA IN THE LIBERATION WAR OF BANGLADESH, ROLL OF INDIAN PEOPLE IN LIBERATION WAR OF BANGLADESH সালাম আজাদের দুটি উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ। তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ CONTRIBUTION OF TRIPURA IN THE WAR OF LIBERATION OF BANGLADESH সম্প্রতি দিল্লী আর্ন্তজাতিক বই মেলায় প্রকাশিত হয়েছে । সালাম আজাদ বাংলাদেশের একমাত্র লেখক যার বই বিশ্বভারতী গ্রন্থ বিভাগ থেকে প্রকাশিত হয়েছে রবীন্দ্র ভূবনে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থটির শিরােনাম বাংলা ও ইংরেজী দুই ভাষাতেই তিনি লিখলেও তাঁর বহু বই ইংরেজী থেকে বাংলা, বাংলা থেকে ইংরেজী, হিন্দী, অছমিয়া (আসামী), মারাঠি প্রভৃতি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে ।