"আঙুলে আমার গোলাপ ফোটে" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: নাগরিক হৈ হুল্লোড় পাশ কাটিয়ে গহীন অরণ্যে ঘাসের ওপর যে প্রজাপতি বসে থাকে, তার রঙিন পাখনায় শব্দ গেঁথে যিনি পৃথিবীকে শােনান হৃদয়াতলের গােপন কথা- তিনি কবি। কবি নােমান রশীদ এমন এক বিরলপ্রজ কবি। কোনাে দ্বিধা-সংকোচ-দূরত্ব বা প্রচার-প্রশংসাহীনতা তাঁকে অন্তত বিপন্ন করে তােলেনি। মানসিক শক্তি, শিক্ষার বহর বা সৃজনভাবনার ঐতিহ্যিক ঔদার্য ও মাহাত্মই বােধকরি এই কবিকে ভূমিকেন্দ্রিক চিন্তা-রােপন-উৎপাদন ও প্রকাশের সাহস যুগিয়েছে। শিল্পসাহিত্যে রাজনীতি প্রবেশ করে জাতীয়তার হাত ধরে। পরে তা প্রসারিত হয় আন্তর্জাতিক পরিসরের প্রশস্থ প্রান্তরে। কালে কালে দেশে দেশে এমনটিই ঘটে আসছে। কিন্তু এই অভিযাত্রার অর্জন কতটুকু- যদি এই চিন্তার খাতা টেবিলে নিয়ে বসি, তাহলে দেখবাে খাতায় তেমন কিছুই লেখা হয়ে ওঠেনি। হয়তাে বা শিল্পী-সাহিত্যিকের বেখেয়ালে, নয়তাে সমাজ-রাষ্ট্র-কাঠামাের অবজ্ঞায়। সাহিত্যের সাফল্য আছে, শিল্পেরও। তবে তার ফলাফলটা প্রকাশ পায় ধীরে। রাজনীতি আর সমাজ চলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির তালে তাল মিলিয়ে। সৃজনভাবুকরা ওই দৌড়ে মাঝে মধ্যে মার খায় বটে! তবে অর্জনটা শেষ পর্যন্ত বােধহয় সামান্য থাকে। মানবতার বিপর্যয়ের কালে কথা বলতে থাকে কবির কলম। লােভলালসা-ইমারত-দাপটে কাতর আর নির্বিকার-অবৈষয়িক-নেপথ্যচারীর সংসার-সহযাত্রা ও দাম্পত্য- এই হলাে আমাদের সর্বনেশে চলমান জীবনধারা। কবির কলম চলে ওই জীবনধারার সাথে তাল মিলিয়ে ।