প্রারম্ভিকা বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসা এবং বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন থেকেই বুয়েটে ভর্তি হয়ে যন্ত্রপ্রকৌশলী হই। অতঃপর উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে পরমাণু প্রকৌশলী হই। কেমন করে জানি হঠাৎ করেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে একটি নিবন্ধ ২০০৭ সালে প্রথম আলোতে প্রকাশ করে লেখায় হাতেখড়ি হয়। তারপর থেকে মাঝেমধ্যে পরমাণু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়, জ্বালানি সংকট, সম্ভাবনাময় জ্বালানি ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের নিবন্ধ পত্রিকায় লিখতে থাকি। হঠাৎ মনে হলো প্রকাশিত সবগুলো নিবন্ধ নিয়ে একটি বই বের করলে কেমন হয়! কিন্তু বাদ সাধে যখন দেখি পরমাণু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয় প্রকাশিত নিবন্ধগুলোকে নিয়ে লিখলে বইয়ের পুরুত্ব খুব একটা ভারী হয় না। তাই কলেবর বাড়ানোর জন্য প্রকাশিত নিবন্ধগুলো ছাড়াও পরমাণু শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈশিষ্ট্য, নিরাপত্তা, তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ও ব্যবস্থাপনা, পারমাণবিক বর্জ্য উৎপাদনের ধরন ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়সমূহকে প্রাধান্য দিয়ে বইটি প্রস্তুত করা হয়েছে। বাংলায় লেখার উদ্দেশ্য একটাই সকল শ্রেণি মানুষের কাছে যাতে বইটি গৃহীত হতে পারে। প্রকাশিত নিবন্ধগুলোর মধ্যে কয়েকটি স্থান পেয়েছে বাংলাদেশে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে লেখা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী ও জনাব বদরুদ্দীন উমর এর প্রকাশিত নিবন্ধের উপর নিজস্ব মতামত।
বইটিতে পরমাণু শক্তি নিষ্ঠুরতা থেকে শান্তিপূর্ণ প্রয়োগের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, পরমাণু শক্তি উন্নয়নের ঘটনাপঞ্জি, পরমাণু শক্তি মানব কল্যাণে শান্তিপূর্ণ প্রয়োগে সাফল্যের ছয় দশক, পরমাণু দুর্ঘটনা, স্বপ্নেভরা পরমাণু শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয় স্থান পেয়েছে। বাংলায় প্রণীত পরমাণু শক্তি বিষয়ক বই খুব একটা চোখ পড়ে না। বইটি পড়ে পাঠকের মনে পরমাণু শক্তি সম্পর্কে কিছুটা হলেও বিভ্রান্তি দূর হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। সব প্রশ্নের উত্তর হয়তো এ বইয়ে পাওয়া যাবে না। এ জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। বর্তমান প্রজন্ম বইটি পড়ে পরমাণু শক্তির আদ্যোপান্ত বিষয়ক বিভিন্ন জটিল প্রশ্নের উত্তর নিজেরাই বের করে পরমাণু শক্তির টেকসই উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবেÑএটাই প্রত্যাশা। বইটির উন্নতির জন্য গঠনমূলক সমালোচনা বা উপদেশ কৃতজ্ঞতাসহকারে গৃহীত হবে।
বইটি লেখাতে প্রেরণা, বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য আমি প্রকৌশলী মোঃ মোজ্জাম্মেল হক, প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, প্রকৌশলী মোঃ আলী জুলকারনাইন, সদস্য (পরিকল্পনা), বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং সর্বোপরি আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রী বিশেষ করে জুবায়ের সাঈদÑএঁদের সকলের কাছে চিরঋণী। স্বপ্নের রূপপুর বাস্তবায়নে জমি দিয়ে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের কাছেও আমি চিরঋণী।
শত ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও বইটির মুখবন্ধ দেয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের প্রেরণা ও উৎসাহ ব্যতিরেকে বইটি এত দ্রুত বাস্তবে রূপ নিত না।
মূল্যবান সময় ব্যয় করে ধৈর্যসহকারে পাণ্ডুলিপিটি পড়ে যথাযথ একটি মূল্যায়ন প্রদান করার জন্য অধ্যাপক ড. খোরশেদ আহমেদ কবিরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। তাঁর এই মূল্যায়ন ছাড়া বইটি প্রকাশে পূর্ণতা পেত না বলে আমি বিশ্বাস করি।
বইটির বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট সুন্দর ও নিখুঁত একটি প্রচ্ছদ ডিজাইন করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক গোপাল চন্দ্র ত্রিবেদীকে।
বইটির পাণ্ডুলিপি মুদ্রণ ও ছবি অংকনে সহযোগিতা করার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই ডিডিসির ডিজাইনার প্রকৌশলী মোঃ গোলাম মোস্তফা ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের উচ্চমান সহকারী মোঃ মনিরুজ্জামানকে।
প্রকাশনা ও মুদ্রণ সৌকর্যের জন্য মল্লিক এন্ড ব্রাদার্সকে বিশেষ করে এর স্বত্ব¡াধিকারী জনাব কামরুল হাসান মল্লিককে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই দ্রুত সময়ে অত্যন্ত সুন্দরভাবে বইটি প্রকাশের জন্যে।
পরিশেষে বইটি প্রস্তুত করতে অভাবনীয় সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রদান করার জন্য স্ত্রী ডাঃ নাহিদ ফারহানা চৌধুরী, বড় মেয়ে সুমাইয়া ফারহানা ইসলাম এবং ছোট মেয়ে মুহাইমিনা ইসলামÑএদের প্রতি রইল আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও আর্শীবাদ। মোঃ শফিকুল ইসলাম