ভূমিকা বাংলাদেশের শিক্ষিত শ্রেণী বেশ কিছুদিন থেকে স্বাস্থ্য-সচেতনতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। বিশেষ করে রাজধানীর মহানাগরিকদের একাংশে সে পরিচয় চোখে পড়ে সকালে-বিকেলে পার্কে ময়দানে নিদেনপক্ষে ফুটপাথ ধরে হাঁটার, (অবশ্য ফুটপাথ যদি দোকানমুক্ত থাকে।) তবু কি শরীর-স্বাস্থ্য সুরক্ষার সব শুলুক সন্ধানে তারা ওয়াকিবহাল? মনে হয় না। তাই জানার বিকল্প নেই। পশ্চিমা বিশ্বের উন্নতদেশে শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে এই জানা শোনার বিষয়টিতে আগ্রহ ও কৌতুহল অপেক্ষাকৃত বেশি এবং সে চাহিদা মেটানোর সুযোগও বেশি প্রধানত রোগ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সহজপাঠ পত্রপত্রিকার বা বইয়ের কল্যাণে। বাংলাদেশে তেমনটা অপেক্ষাকৃত কম। তবু কয়েক দশক ধরে স্বাস্থ্যবিষয়ক বই বা কলাম লেখা হচ্ছে, কোনো কোনো পাঠকপ্রিয় পত্রিকায় শ’খানেক শব্দের স্বাস্থ্যসংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। এসবই শুভ লক্ষণ। জানা ও বোঝার তো শেষ নেই। আর শরীর ও স্বাস্থ্য বিষয়ের খুটিনাটিতে এরা আরো সত্য। বলা যায় জানার বিষয়টি খুবই জরুরি। এই জানা বোঝার জরুরিত্বের কারণে এবং এসব বিষয়ে সাধারণজ্ঞানের চাহিদা মেটাতে পূর্বকথিত বেশ কিছু স্বাস্থ্যকলাম এবং সেইসঙ্গে রোগ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক কিছু তথ্যের বয়ান নিয়ে এবারের সংকলন ‘ভালো থাকার শুলুক সন্ধান’ প্রকাশিত হলো। এতে মানব দেহ এবং রোগ ও আবিষ্কার বিষয়ক এমন কিছু তথ্যও রয়েছে যা পাঠে স্বাস্থ্যসন্ধানী পাঠকের কৌতুহল ও জানার আগ্রহ মেটাতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস। সংকলনটি প্রকাশের জন্য ‘বিভাস’ প্রকাশনার স্বত্বাধিকারী রামশংকর দেবনাথকে অজস্র ধন্যবাদ। -আহমদ রফিক
সূচি * শরীর ‘ফিট’ রাখতে হলে * ‘ফোক মেডিসিনে’র কেরামতি পরীক্ষা * জীবনটাকে যৌবনের জলোচ্ছ্বাসে ধুইয়ে দাও * স্মৃতি বিস্মৃতি ও মস্তিষ্করহস্য নিয়ে কথা * বার্ধক্য সত্যই কি জয়ের উর্ধ্বে * চর্বি কোলেস্টেরলের সাথে লড়াই ১ * চর্বি কোলেস্টেরলের সাথে লড়াই ২ * কোলেস্টেরল ‘ফোবিয়া’য় ভুগতে মানা * সুনির্বাচিত খাদ্যে হৃদরোগ প্রতিরোধের সম্ভাবনা * বুক ব্যথার রকমফের * আপনি কি চাইবেন না বিষমুক্ত ফল খেতে * খাদ্যদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরী * নানা শাকে নানা গুণ : একাধারে খাদ্যগুণ, ভেষজগুণ * মনভোলানো সর্ষে থেকে সয়াবিনের বিরূপ ঘ্রাণে * উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দৈহিক ভোগান্তি * ব্যায়াম আপনার স্বাস্থ্যরক্ষার সঙ্গী * রোগ নিরাময়ে মন * মানসিক চাপতাপের সাতকাহন * কীভাবে সর্বনাশা ঝোঁক গড়ে ওঠে * আসুন, সবাই মিলে খাদ্য বিষ প্রতিরোধে তৎপর হই * ফল ও খাদ্যদ্রব্যের দূষণ ঠেকাতে চাই কঠোর আইন ও এর প্রয়োগ * ওষুধনীতির যথার্থ প্রয়োগ ক্রেতাস্বার্থে অত্যন্ত জরুরি * মাদকাসক্তি, অপরাধ ও সামাজিক অবক্ষয় * অনিদ্রার নানা দিক * ঘুমের কি প্রয়োজন আছে? * আয় ঘুম, আয় * মাথাব্যথা নিয়ে কথা * মধ্যাহ্নের বিষণ্নতা * ডিপ্রেশনে ভুগছি * হাড় ভাঙার ঝুঁকি এড়ানো * পেশী গড়ার ব্যায়াম * সম্মোহন প্রক্রিয়ার রহস্য ও সম্ভাবনা * জীন প্রযুক্তির অবাক ভুবনে * কৃত্রিম হৃদয়ের সন্ধানে * ক্যান্সার রহস্য * জীবনযাপনে ও দেহযন্ত্রে আমলাতন্ত্র
প্রাবন্ধিক, কবি ও কলামিস্ট হিসাবে খ্যাত আহমদ রফিক, (জন্ম ১৯২৯) ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য-সংস্কৃতি ও রাজনীতির আকর্ষণে সমভাবে আলোড়িত ছিলেন। তিনি বাহান্নার ভাষা-আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক। প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে তার শিক্ষাজীবন বার বার বিপর্যস্ত হয়েছে। পেশাগতভাবে শিল্প ব্যবস্থাপনার সঙ্গে একদা যুক্ত থাকা সত্ত্বেও মননের চর্চাতেই তিনি অধিক সমর্পিত। এখন পুরোপুরি সাহিত্যকর্মে সক্রিয়। একাধিক সাহিত্য ও বিজ্ঞান পত্রিকার বিভিন্ন সামাজিক কর্মযজ্ঞে। রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র ট্রাস্টের তিনি প্রতিষ্ঠাতা, বাংলা একাডেমীর ফেলো এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জীবন সদস্য। তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে শিল্প সংস্কৃতি জীবন (১৯৫৮), আরেক কালান্তরে (১৯৭৭), বুদ্ধিজীবীর সংস্কৃতি (১৯৮৬), ভাষা আন্দােলন : ইতিহাস ও তাৎপর্য (১৯৯১), রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্প (১৯৯৬), জাতিসত্তার আত্মঅন্বেষা (১৯৯৭), রবীন্দ্ৰভুবন পতিসর (১৯৯৮) এবং জীবনানন্দ : সময় সমাজ ও প্রেম (১৯৯৯)। নির্বাচিত কলাম (২০০০), বাংলাদেশ : জাতীয়তা ও জাতিরাষ্ট্রের সমস্যা (২০০০), একাত্তরে পাকবর্বরতার সংবাদ ভাষ্য (২০০১), কবিতা আধুনিকতা ও বাংলাদেশের কবিতা (২০০১)। কবিতাগ্রন্থের মধ্যে নির্বাসিত নায়ক (১৯৯৬), বাউল মাটিতে মন (১৯৭০), রক্তের নিসর্গে স্বদেশ (১৯৭৯), বিপ্লব ফেরারী, তবু (১৯৯৮), পড়ন্ত রোদুরে (১৯৯৪), Selected Poems (১৯৯৪), শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৯৮). ভালোবাসা ভালো নেই (১৯৯৯), নির্বাচিত কবিতা (২০০১) উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯২ সালে অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার পান। সাহিত্যক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৫ সালে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদকে ভূষিত হন। কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে পেয়েছেন ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি ও স্বদেশে রবীন্দ্র পুরস্কার (১৪১৮) । এছাড়া অনেক কাঁটা প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মাননা ও স্বর্ণপদক।