"মাওলানা রুমির আত্মদর্শন" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ সুফি জগতের উজ্জল নক্ষত্র, মুসলিম দুনিয়ার আলােড়ণ সৃষ্টিকারী তত্ত্ব সম্রাট, প্রেমিককুলের বুলবুলি, আধ্যাত্ম রাজ্যের অবিসংবাদিত প্রেমিকপুরুষ; মুসলিম রেনেসার যুগান্তকারী কাব্যসম্রাট, স্রষ্টাতত্ত্ব ও সৃষ্টি রহস্যের নিগুঢ় তত্ত্ব প্রকাশকারী মহাপুরুষ সত্তা মাওলানা জালালুদ্দীন রুমি (রা.) আত্মদর্শনের ক্ষেত্রে আশেকের পরিচয় দিতে গিয়ে মসনবীর বয়েতে বলেন— মিয়ানে আশেক মাশুক রমজিস্ত, কেরামান কাতিবিন হামরা খবর নিস্ত। অর্থ: ‘আশেক মাশুকের ভেতরে কি ঘটে তার খবর কেরামান কাতিবিন ফেরেশতারাও জানে না। তিনি আরও বলেনমিল্লতে এশক আজ হামা মিল্লাত জুদাস্ত, আশেকারা মাজহাবও মিল্লাত খােদাস্ত। অর্থ: ‘প্রেমের সম্প্রদায় অন্যান্য সম্প্রদায় হতে ভিন্ন। যারা প্রেমিক তাদের মাজহাব ও সম্প্রদায় হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ।' আত্মদর্শনকারী সম্পর্কে মাওলানা রুমি মসনবীর বয়েতে বলেন - ওয়াহদাতন্দর ওয়াহদাতাস্তী মসনবী। আয় সামাক রাও তা সেমাক আয় মা’নবী। অর্থাৎ আমার এই মসনবী তৌহিদের বর্ণনা দ্বারা। পরিপূর্ণ। অতএব, ওহে হাকিকত অন্বেষণকারী, তােমার খেয়ালকে অধঃমন্ডল হতে উত্তোলিত করে উধ্বমন্ডলে নিয়ে চল।। রুমি আরও বলেনতা যে যহরাে আয শকর দর নাগ-যারী কায় তূ আয গুলযারে ওয়াহদত বৃ বরী যে যাবৎ তুমি বিষ ও মিসরী (অর্থাৎ আধিক্যের জগত) হতে অতিক্রম না করবে, তাবৎ তৌহিদের বাগানের খােশবু তুমি পাবে না।' বন্ধুগণ! এই গ্রন্থটি মসনবী ও রুমির রচিত অন্যান্য দিওয়ানগুলাের সারবস্তুর ব্যাখ্যা সম্বলিত গ্রন্থ। মাওলানা রুমির আত্মদর্শনের মাঝে তার প্রেমিক সত্তার পরিচয় সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এই গ্রন্থ পাঠক-ভক্তদের রুমির সঠিক পরিচয় জানতে ও বুঝতে এবং আত্মার খােরাক হিসেবে উক্তৃষ্ট আস্বাদ দানে সক্ষম হবে বলে আমার একান্ত বিশ্বাস।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।