এ উপন্যাসের পটভূমি ও কাহিনি প্রায় চল্লিশ বছর আগেকার সময়ের। যা পড়লে ফিরে যাবেন সেই জগতে, যা আপনি পেরিয়ে এসেছেন চল্লিশ বছর আগে। যখন আপনার বাবা-কাকারা লাঙ্গলজোয়াল আর গরু দিয়ে জমিনে হালচাষ করতাে। এখন আপনি ইঞ্জিন চালিত ট্রাক্টরে খুব অল্প সময়ে হালচাষের কাজটা সেরে নেন। তখন চিঠির মাধ্যমেই দেশ-বিদেশে যােগাযােগ করা হতাে। এখন এসএমএস, ইন্টারনেট, ফেসবুক, আর স্কাইপির মাধ্যমে যােগাযােগ করতে মাত্র কয়েক সেকন্ডে সময় লাগে । সাদা-কালাে টেলিভিশনটাতে অ্যালুমুনিয়ামের অ্যান্টেনায় সিলভারের পাতিলের ঢাকনা লাগিয়ে কত সাধনা করে বাংলাদেশ টেলিভিশনে বিভিন্ন প্রােগ্রাম দেখতে হতাে, এখন ঘরে রঙ্গিন টেলিভিশন আছে, স্যাটেলাইট সংযােগে কত চ্যানেল দেখা যায়! তখন হয়তাে আপনি আপনার বাবার আঙ্গুল ধরে হেঁটে হেঁটে গঞ্জের হাটে যেতেন, আর হাটের মধ্যস্থলে ডালপালা মেলে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে থাকা বুড়াে বট বৃক্ষের তলে লােকজনের সঙ্গে মিলিত হয়ে সাপ-বেজিতে লড়াই দেখার প্রত্যাশায় বড় বড় দাড়িগোঁফঅলা একটি লােকের লেকচার শােনে মুগ্ধ হতেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সাপ-বেজিতে লড়াই শুরু না করে লােকটি একটি চামড়ার ব্যাগ থেকে গাছের শেকড়-বাকড় দিয়ে তৈরি নানা রকমের অষুধ বিক্রি শুরু করতে দেখে বিরক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে আসতেন। কখনও সময় গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যেত। অবশ্য তখন সময় বােঝার উপায় ছিল না। কারণ তখনও মানুষ খুব বেশি ঘড়ি ব্যবহার করতে শিখেনি। তাছাড়া ঘড়ি সহজলভ্যও ছিল না। তাই মানুষ সময় নির্ধারণ করত আকাশের বুকে সূর্যের অবস্থান দেখে। সূর্যঘড়িই ছিল সময় নির্ধারণের একমাত্র উপায়। চল্লিশ বছর আগেকার সেই সময়ের মানুষের জীবন-যাপন, আচারআচরণের চালচিত্র বর্ণিত হয়েছে এই গল্পে।
Abul Basher- জন্ম বাংলাদেশের সাথে গণ জাগরণের বছরে, কুমিল্লা শহরের পাশে দিশাবন্দ গ্রামে। মায়ের আদর বোঝার আগেই মাকে হারালেও বড় ভাইয়ের আদর মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি। শৈশব কেটেছে গ্রামে, তাই সীমাহীন মুক্তি আর প্রকৃতি-প্রদত্ত প্রাচুর্যের মধ্যে। অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে পাশ্চাত্যে কিছুদিন শিক্ষকতা শেষে বর্তমানে দেশে একটি দাতা সংস্থায় কর্মরত। ভালো লাগে রবীন্দ্র সংগীত, জীবনানন্দ দাশের কবিতা আর শীতের দুপুর। খারাপ লাগে মানুষের অহেতুক রূঢ়তা। ব্যক্তি জীবনে এক অমূল্য সোনার কেল্লার অধিকারী, যার অপর তিন স্তম্ভÑসোনামুখী ফারহা, সূর্যমুখী টাপুর এবং চন্দ্রমুখী টুপুর।