‘শুভ্র মেঘের ধবল পালে/মন মাতানো কাশের কালে/আমায় ডাকে কেউ?/মন বিবাগী পাড়ের ঘাটে/সূর্য ডোবা লালের পাটে শান্ত নদীর ঢেউ!’ (মন মাতানো কাশের কালে/পৃষ্ঠা- ৩২) ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। এমন ঋতু বৈচিত্র্য পৃথিবীর অন্য কোথাও তেমন দেখা যায় না। প্রতিটি ঋতুর রয়েছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। সেসব ঋতুতে ফোটে নানা ফুল। শরৎ তেমনি একটি ঋতু যে ঋতুতে ফোটে কাশফুল। সেই কাশফুলকে নিয়ে ছড়াকার শ্রাবণ নজরুল লিখেছেন ‘মন মাতানো কাশের কালে’ নামের ছড়ার বইটি। ৩২ পৃষ্টার এ বইটিতে প্রকাশিত হয়েছে ২৬টি ছড়া। ছড়া এমনই এক সাহিত্য-মাধ্যম যা দিয়ে বলতে গেলে সব বিষয়ই প্রকাশ করা যায়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নানা বিষয়কে নিয়ে ছড়া লিখেছেন শ্রাবণ নজরুল। বিশেষ করে শিশু কিশোরদের মন জয় করার মতো ছড়া লিখেছেন শ্রাবণ নজরুল। ‘দুষ্ট ছেলের দল/কোথায় পেলি বল/হলদে পাখির ছানা?/মা পাখিটা দূরে/গিয়েছিলো উড়ে/তাই করেনি মানা!’ (দুষ্ট ছেলের দল/পৃষ্ঠা-৭) ‘দুরন্ত যে বীর ছেলেদের/রক্তে কেনা সোনার এ দেশ,/দুঃখ নদী সাগর বেয়ে/আনলো যারা প্রিয় স্বদেশ।’ (স্বাধীনতার কী সুখ পেল?/পৃষ্ঠা-১৮) বইটির প্রতিটি ছড়ার সাথে যুক্ত করা খুবই দৃষ্টিনন্দন ছবি। এ ছবিগুলো এঁকেছেন শিল্পী হামিদুল ইসলাম। বর্ষা, হেমন্ত, ফাগুন নিয়েও রয়েছে ছড়া। শ্রাবণ নজরুলের ছড়ায় ছন্দের বেশ দক্ষ প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। শুধু অন্তমিল দিয়েই যে ছন্দের দাবি মেটে না সে বিষয় তিনি সচেতন। মাত্রা ও ছন্দের একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা বিরাজ না করলে ছড়ার গতি মন্থর হয়ে পড়ে। শ্রাবণ নজরুলের এ ছড়ার বইটি পড়তে পাঠকের সে সমস্যা হবে না। স্বদেশ প্রেম ও প্রকৃতির একটি মিশ্র রসায়ন এ বইটির ছড়াগুলো। শিশু কিশোরদের ছড়া পাঠের স্বাদ মিটাবে বলে বইটি সংগ্রহে রাখার মতো একটি বই।
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকে কর্মরত সে। জন্ম রাজধানী ঢাকার ইট পাথরের কঠিন দেয়ালে ঘেরা এক রুক্ষ পরিসরে হলেও বেড়ে ওঠা ফেনী, ফরিদপুর, যশোর, চট্রগ্রাম আর সেলেটের সবুজ শ্যামলীমায়্। পৈত্রিক বসতি ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার নেয়াজপুর গ্রামে।