জনা: ১৫ জুন ১৯৮৯। জন্মস্থান: গ্রাম: সাচড়া, ডাকঘর: দরুন বাজার, থানা: বোরহান উদ্দিন, জেলা: ভোলা। শিক্ষা: বাংলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর। পিতা মাস্টার আব্দুস সালাম ভূঁইয়া। মাতা: সেলিনা বেগম। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। লেখালেখি শুরু ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে। লেখার বিষয়: কবিতা, ছড়া, গল্প ও উপন্যাস। প্রথম দশকের অন্যতম প্রধান কবি বোরহান মাসুদ। দেশের প্রথম শ্রেণির দৈনিক ও মাসিক পত্র পত্রিকাগুলোতে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। সমসাময়িক বাংলা কবিতার আলোচনায় বারবার উচ্ছারিত এই নাম। 'টাট্টুঘোড়ার ডিম' বইটি লেখকের প্রথম প্রকাশিত বই। তাঁর অন্য বইগুলো হল- 'পরির মেয়ে ফুল পরি, উড়ছে পাখি হৃদয় পুরে, আসবে বাবা ট্রেনে ইত্যাদি।' তিনি বাংলা একাডেমি তরুণ লেখক প্রকল্পের বাছাইকৃত তরুণ লেখক এবং বাংলা একাডেমির সদস্য। ২০১৩ সালে 'টাট্টুঘোড়ার ডিম' লেখাটি মিনা এ্যাওর্ডে মনোনিত হয়েছিলো। 'অন্য মুখ' পত্রিকার সম্পাদক। বোরহান মাসুদ বিচিত্র বিষয় নিয়ে লেখালেখি করে থাকেন। তাঁর লেখা কবিতা, গল্প, ছড়া, উপন্যাস যা স্বদেশ, গ্রাম-গঞ্জ, নদী, মা, ফুল, পাখি, প্রকৃতি, প্রেম তাঁর কবিতায় বহমান। শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিগুলো এবং বাংলাদেশের রূপ ফুটে ওঠে তাঁর লেখায়। শব্দ, ছন্দ ও আবেগে তার প্রতিটি কবিতা প্রকাশ-নৈপুণ্যে অসামান্য। আধুনিক চিত্রকল্প বিন্যাসে অপূর্ব ব্যঞ্জনায় উন্নীত করেছেন এই কবি। দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন বিভিন্নভাবে। তার বন্ধুবাৎসল্যস্বভাব মানুষকে মুগ্ধ করে। সাহিত্য চর্চার মধ্যে দিয়ে খুঁজে পান মনের তৃপ্তি। শিশুদের মনের আনন্দ বেদনা উচ্ছ্বাস অনুভূতি সবই তিনি ফুটিয়ে তোলেন নিপুন হাতে। তাঁর লেখার ভাষা অতি সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল। তাই তাঁর লেখা ছোট, বড় সকলের মনের গভীরে ছাপ ফেলতে সক্ষম। প্রকৃতি ও নারীর প্রতীকে কবিতার গভীর দার্শনিকতা নির্মাণ করেছেন, যা সহজেই তাঁর নিজস্ব বলে চেনা যায়। হৃদয় দিয়ে কবিতা লিখেন তিনি। আপাত সরল বাক্যেও অন্তরালে বহুমাত্রিক অর্থ গেঁথে দিয়ে কবিতাকে রূপকাশ্রিত করে তোলা তাঁর প্রধান বৈশিষ্ট্য। আবার কখন তাঁর কবিতার মধ্যে ক্ষোভ, বেদনা, দ্রোহ, শৈল্পিকভাবে প্রতিকায়িত হয়েছে। বিষয় ও ভাষাশৈলী বোরহান মাসুদের কবিতাকে করেছে আলাদা। তাঁর প্রেমকে কবিতায় প্রকাশ করে গভীর এক স্থিরপ্রজ্ঞায়। শব্দের বন্ধন মোচনের সচেতন প্রচেষ্টাও লক্ষণীয় তাঁর কবিতায়। সমকালীন জীবনের জটিলতা, ক্রোধ, আশা-হতাশা এবং স্বপ্নের সম্ভাবনা তাঁর কবিতায় বাঙময় হয়ে উঠেছে। প্রেম থেকে সমাজ, সংসার, দিনাতিপাত, জীবনের বয়ে আনা ইতিহাস, বহুবিধ লৌকিক ধারণা, গাছপালা- সমুদ্র-নদী-প্রকৃতি সবই অনুষঙ্গ হয়ে আসে একান্তই এই কবির উচ্চারণে। তাঁর কাব্যভাষা নিজস্ব ভঙ্গির দারুণ এক রসায়ন। কবি বোরহান মাসুদ'কে অনেকেই বলেন "বাংলা কবিতার প্রকৃতি ও প্রেম- পদাবলির নয়াসাধক।" ছন্দসচেতনতা, পরিমিতিবোধ এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার সংমিশ্রণ তাঁর কবিতার অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য।