আমার বাবা আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দীনের জন্ম ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি, সিরাজগঞ্জের ফুলবাড়ী গ্রামে। তাঁর নাম বেশ দীর্ঘ, তবে লেখালেখির সময় তিনি 'শরফুদ্দীন' ব্যবহার করতেন না, 'আবদুল্লাহ আল-মুতী' নামেই লিখতেন। নাম ছোট করার জন্যই হয়তো 'শরফুদ্দীন' বাদ দেয়া। পড়াশোনায় বরাবরই তিনি ভালো ছিলেন এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, পড়াশোনায় ভালো না হলে কি বড়মাপের মানুষ হওয়া যায়? ম্যাট্রিকে ঢাকা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। ইন্টারমিডিয়েটে একটা পরীক্ষার প্রশ্ন খারাপ হয়েছিল বলে সব পরীক্ষার্থী হল থেকে বের হয়ে যায়। তাদের সঙ্গে আব্বাও বের হয়ে যান। একটা পেপারের পরীক্ষা না দিয়েই তিনি ইন্টারমিডিয়েটে একাদশ স্থান পেয়েছিলেন। অনার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি পেলেও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ১৯৫৭ সালে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএডে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন আব্বা। এরপর কিছুদিন টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিএডে প্রথম হওয়ার জন্য আব্বাকে 'আমার প্রথম লেখা' নামে যে বইটা উপহার দেয়া হয়, তাতে তাঁরও একটা লেখা ছিল। অনার্স ও মাস্টার্সে তার বিষয় পদার্থবিজ্ঞান হলেও যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছিলেন শিক্ষার ওপর। আব্বা পিএইচডি করতে যান ১৯৬০ সালে। এর পাঁচ বছর আগেই অর্থাৎ ১৯৫৫ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। আর ১৯৮৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (বর্তমানে আলাদা মন্ত্রণালয়) সচিব হিসেবে।