নিরাপদ সমাজ সৃষ্টির অন্যতম সোপান অপরাধ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি। একটি চলমান সমাজব্যবস্থায় অপরাধ সংঘটন হবে এটা যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য যে নাগরিকদের মধ্যে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টি অপরাধ সংঘটনের প্রবণতাকে অনেকটাই হ্রাস করবে। নিরাপত্তা হ্যান্ডবুক এর মূল উদ্দেশ্য হলো সর্বমহলে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে অপরাধীর অপরাধ করার ক্ষেত্র বা সুযোগগুলো কমিয়ে এনে অধিকতর নিরাপদ সমাজ সৃষ্টিতে সহায়তা করা। বর্তমান যুগে আমরা সবাই কম-বেশি ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়টাকে আমরা খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার সুযোগ পাই না। এজন্য জীবনে অনেক সময় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে। অথচ একটু সতর্ক হলে এই বিপর্যয় থেকে নিজেদের আমরা রক্ষা করতে পারি। এরকমই কিছু বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে নিরাপত্ত হ্যান্ডবুকে। যেমন, ছিনতাই প্রতিরোধে আমরা কী করতে পারি, কীভাবে নিজের বাসাবাড়িকে রক্ষা করতে পারি, মোবাইল ফোন ক্রয়ের সময় আমাদের কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, দূর পথের যাত্রায় আমাদের কী পূর্ব পরিকল্পনা থাকা উচিত, বাসা ভাড়া দেওয়া কিংবা নেওয়ার সময় কী কী বিষয়ে লক্ষ রাখা উচিত, প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী, কোন অপরাধের জন্য কী শাস্তি, দেশের থানার নম্বরসমূহ ইত্যাদি। ‘নিরাপত্তা হ্যান্ডবুক’ যদি পাঠকের নিরাপত্তা সচেতনতাকে সামন্যতমও সৃদ্ধি করতে সমর্থ হয় সেটাই হবে নিরাপত্তা হ্যান্ডবুকের স্বার্থকতা।
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।