ফ্ল্যাপে লেকা কিছু কথা সকালে ঘুম ভাঙার পর নিয়াজ, রেজা আর আনন্ত দেখল-অন্যরকমভাবে ঘরের ভেতর ঘোরাঘুরি করছে কবির, ওদের বন্ধু। ওর দিকে তাকানো যাচ্ছে না। একবার চোখ ভয়াবহ লজ্জার ব্যাপার!কবির যে এই ভাবে প্রতিশোধ নেবে, ওরা তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কোনোদিন।ওর হাত-পা ধরে মাফ চাওয়ার পরও মাফ না পেয়ে ওরা যখন হতাশ, ঠিক তখনই জানতে পারল, ওদের আরেক বন্ধু রোহানের বান্ধবী উর্বি আসছে এখানে। মাথায় হাত ওদের। মান-সম্মান আজ সব ধুলোয় মিশে যাবে! ‘প্লিজ দোস্ত-।’ হাত জোড় করে নিয়াজ কবিরকে বলর, ‘তুই তোর ঘরে যা, কিছু একটা পড়ে নে। উর্বি যদি কোনোভাবে টের পায়----।’ না, কারো কথাই শোনে না কবির, আগের মতোই থাকে সে। উর্বি হাসতে হাসতে ঘরে ঢোকে একসময়, ঢুকে বলে,‘কাল রাতে কবির ভাইকে নিয়ে মজার একটা স্বপ্ন দেখেছি। কবির ভাই কোথায়? বলতে বলতেই কবিরের ঘরের দরজার সামনে দাঁড়ায় সে, দরজার নবে হাত রাখে, আস্তে আস্তে খুলে যাচ্ছে দরজাটা। রুদ্ধশ্বাসে সবাই তাকিয়ে আছে কবিরের দরজার দিকে..... তারপর? এই কবির একদিন একটা ডায়েরি খুজে পায় রাস্তায়। ডায়েরিতে নাম আছে-প্রীতি। মোবাইল নাম্বারও আছে তার, কিন্তু লাস্ট ডিজিটা নেই!এই মেয়েটাকে পাওয়ার জন্য কবির সাহায্য চায় এবার নিয়াজের। এবার প্রতিশোধ নেওয়ার পালা তার এই প্রীতিকে খুঁজতে গিয়েই আনন্দ আর আনন্দ, মজা আর মজা। সবশেষে খুঁজে পায়া তারা প্রীতিকে। প্রীতি ছোট্ট করে বলে, ‘ইয়েস.....।’ মাথা নিচু করে ফেলে সবাই- নিজেকে লুকাতে, চোখ লুকাতে, ভেজা পাপড়ি লুকাতে কিন্তু কবির চেয়ে আছে প্রীতির দিকে, অপলক চোখে, কঠিন চোখে। প্রবল ঝড় ওঠার আগে পৃথিবী যেমন শান্ত হয়ে যায়, সেই শান্ত চোখে।
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।