ফ্ল্যাপে লিখা কথা বাংলা কবিতার ধারায় জসীমউদ্দীনের স্বাতন্ত্র্য অবিসংবাদিত । রবীন্দ্রপ্রভাব থেকে মুক্তিলাভের চেষ্টায় আমাদের আধুনিক কবিরা যখন পাশ্চাত্য প্রভাবকে অঙ্গীকার করেছিলেন, জসীমউদ্দীন তখন দেশীয় ঐতিহ্য ও গ্রামীণ পরিবেশের মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন কবিতার নতুন উপাদান। তাঁর কবিতায় পল্লীজীবনের সুখদুঃখ হাসিকান্না প্রেমভালোবাসা ঈর্ষাদ্বন্দ্ব তার সকল আদিমতা নিয়ে দেখা দিয়েছিল। কবিতার ভাষায়ও তিনি নিঃসংকোচে আমদানি করেছিলেন গ্রাম্য শব্দ। এমনি করে জসীমউদ্দীন বাংলা কবিতায় স্থায়ী আসন তৈরি করে নিয়েছিলেন। পঞ্চাশ ভচর ধরে বাংলা কবিতাকে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন, বাংলা গদ্যেও রেখেছেন আপন স্বাক্ষর। জসীমউদ্দীনকে নিয়ে আমরা যতটা গর্ব করি, সে তুলনায় তাঁর রচনার অনুশীলন ও বিশ্বেষণ অতটা করি না। বর্তমান গ্রন্থে সেই অনুশীলন ও বিশ্বেষণের পরিচয় আছে, পরিচয় আছে লেখকের নিষ্ঠা ও শ্রমের। জসীমউদ্দীনের কবিতার কিছু সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন লেখক। তবে তিনি যে কবির অনুরাগী পাঠক, এই গ্রন্থের সর্বত্র তার স্বাক্ষর আছে। পাশ্চাত্য সাহিত্য-সংস্কৃতির বারংবার উল্লেখ আছে এ বইতে। তার সবটা হয়তো জসীমউদ্দীনকে বোঝার জন্যে আবশ্যক নয়। তবে জসীমউদ্দীনকে বোঝার জন্য যে মনের আবশ্যক, তিতাশ চৌধুরীর তা আছে। ড.আনিসুজ্জামান
জন্ম ১৮ জুলাই ১৯৫৪ সালে। পেশাগত জীবনে তিনি অধ্যাপনার সঙ্গে জড়িত। লিখছেন কয়েক যুগ ধরে। বিবিধ বিষয়ে রয়েছে তার অনেক বই। কবিতা, গবেষণা, ফোকলোর, শিশুতোষ লেখা, অনুবাদ, স্মৃতিকথা, ইতিহাসভিত্তিক লেখা, সম্পাদনাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা তার গ্রন্থগুলো ইতোমধ্যে সর্বমহলে স্বীকৃতি লাভ করেছে। তিনি লাভ করেছেন শ্রেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবে অলক্ত পুরস্কার (১৯৭৮); কুমিল্লা জেলার ইতিহাস রচনার জন্য স্বর্ণপদক এবং বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য কুমিল্লা ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক (১৯৯৬)।