’দ্য গ্রান্ড ডিজাইন' বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা এস. ডব্লিউ হকিং বর্তমানকালের আইনস্টাইন বলে পরিচিত। তার রচিত । আলােড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থ ব্রীফ হিস্টরি অফ টাইম’ প্রকাশিত হওয়ার বাইশ বছর পর গ্রান্ড। ডিজাইন (২০১০) প্রকাশিত হল। এ সময়ের মধ্যে নাসা, সার্ন, কব, ওয়াম্প সংস্থা মহাকাশ ও মহাবিশ্ব গবেষণায় নানা তথ্য। সংগ্রহ করে। তাত্ত্বিক হকিং তা সমন্বয় করে | মহাবিশ্বের সৃষ্টি, আকার, সীমানা, বিবর্তনসহ। বহুবিশ্বের তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন। এ ক্ষেত্রে। ক্লাসিক্যাল তত্ত্বের সাথে কণাবাদী তত্ত্বের। প্রয়ােগে এম-তত্ত্ব তার অনন্য প্রস্তাবনা। ফলে মডেল নির্ভরতায় রচিত গ্রান্ড ডিজাইন গ্রন্থটি। পাঠে মহাবিশ্বের আদি রহস্য আস্বাদন করা। যায়। প্রফেসর মতিয়র রহমান দেড়যুগ ধরে। হকিং এর তত্ত্ব, তথ্য, চিন্তনকে লালন করে। আসছেন এবং এ বিষয়ে তিনটি গ্রন্থ রচনা করেন। যার কয়েকটি মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। এ গ্রন্থটিও পাঠকমহলে সমাদৃত হবে বলে আশা রাখি। —প্রকাশক
সূচিপত্র ১। দ্য গ্রান্ড ডিজাইন গ্রন্থটির সাধারণ পরিচিতি /১০ ২। প্রবন্ধসমূহের সারসংক্ষেপ / ১৭ ক. অস্তিত্বের রহস্য (The Mystry of Being) / ১৭ খ. বিধির অনুশাসন (The Rule of Law) / ১৯ গ. সত্যের স্বরূপ কী (What is Reality) / ২৫ ঘ. বিকল্প ইতিহাস (Alternative Histories) / ৩১ ঙ. সবকিছুর তত্ত্ব (Theory of Everything) / ৩৬ চ, আমাদের বিশ্বের কথা (Choosing Our Universe) / ৪৮ ছ, দৃশ্যমান অলৌকিকতা (The apparent Miracle) / ৫৯ জ, নকশাটি মহান (The Grand Design) / ৬৮ ৩। গ্রান্ড ডিজাইন পর্যালােচনা / ৭২ ৪। গ্রান্ড ডিজাইনে ঈশ্বর প্রসঙ্গ / ৮৫
Title
দ্য গ্রান্ড ডিজাইন: পরিচিতি পর্যালোচনা ও ঈশ্বর প্রসঙ্গ
স্টিফেন উইলিয়াম হকিং একাধারে একজন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী, মহাবিশ্ববিজ্ঞানী এবং লেখক। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক মহাকাশবিদ্যা বিভাগের পরিচালক এবং অধ্যাপক ছিলেন। বিংশ ও একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা এই মেধাবী মানুষটির নাম শোনেননি, এমন পড়াশোনা জানা মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। স্টিফেন হকিং ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলের পড়াশোনার পাট চুকিয়ে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত মহাকাশতত্ত্ববিদ ডেভিড সিয়ামার তত্ত্বাবধানে পিএইচডি প্রোগ্রামে যোগ দেন। গ্যালিলিওর জন্মের ঠিক তিনশ বছর পর জন্ম নেওয়া এই বিজ্ঞানী তখন থেকেই তাঁর প্রতিভার স্ফূরণ ঘটাতে থাকেন। পিএইচডি শেষ করার আগেই মাত্র ২১ বছর বয়সে তাঁর জীবন আচমকা থমকে দাঁড়ায়। মোটর নিউরন রোগ বা এমায়োট্রফিক ল্যাটেরাল স্ক্লেরোসিস নামক এক বিরল রোগে আক্রান্ত হন হকিং। এই রোগে পেশি নাড়ানোর জন্য দায়ী নিউরনগুলোর মৃত্যু ঘটতে থাকে এবং শরীরের প্রায় সব অংশ অচল হয়ে যেতে থাকে। বাগদত্তা জেইন ওয়াইল্ড ও সুপারভাইজার সিয়ামার অনুপ্রেরণায় আশার সঞ্চার হয় তাঁর মাঝে। ঠিকমতো কলমটিও ধরতে না পারা এই বিজ্ঞানী ১৯৭৪ সালে বিজ্ঞানী রজার পেনরোজের সাথে তাঁর কালজয়ী ব্ল্যাকহোল তত্ত্ব প্রকাশ করেন, বর্তমানে যা হকিং রেডিয়েশন নামেও পরিচিত। তিনি রয়্যাল সোসাইটি অফ আর্টস এর সম্মানিত ফেলো এবং পলিটিক্যাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের আজীবন সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরষ্কার ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম’ খেতাবে ভূষিত হন। লেখক হিসেবেও হকিং বিস্ময়কর কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। স্টিফেন হকিং এর বই সমূহ পাঠক সমাজে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাঁর নিজের তত্ত্ব ও বিশ্বতত্ত্ব নিয়ে রচিত বই ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’ দিয়ে তিনি ব্রিটিশ সানডে টাইমস এর বেস্ট সেলার তালিকায় ছিলেন টানা ২৩৭ সপ্তাহ। স্টিফেন হকিং এর রচনা সব ধরনের পাঠকদের কাছে জটিল বৈজ্ঞানিক কথাবার্তা সহজভাবে জানার পাথেয় হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত এই বিজ্ঞানীকে ১৯৭৯ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসিয়ান অধ্যাপকের সম্মাননা দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে তিনি এই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পাঠকনন্দিত স্টিফেন হকিং এর বই সমগ্র হলো ‘দ্য ইউনিভার্স ইন আ নাটশেল’, ‘দ্য গ্র্যান্ড ডিজাইন’, ‘মাই ব্রিফ হিস্ট্রি’, ‘দ্য থিওরি অফ এভরিথিং’, এবং ‘দ্য নেচার অফ স্পেস অ্যান্ড টাইম’। ২০১৪ সালে ইউনিভার্সাল পিকচার্স ‘দ্য থিওরি অফ এভরিথিং’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে। এই সিনেমায় স্টিফেন হকিং এর ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য এডি রেডমেইন জিতে নেন অস্কার। শারীরিকভাবে ভীষণ রকম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েও হকিং তাঁর গবেষণা কার্যক্রম সাফল্যের সাথে চালিয়ে যান। ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ ৭৬ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।