চিন দেশের আয়তন এত বিপুল যে তা একক কল্পনায় আনা প্রায় অসাধ্য। তার তিন হাজার বছরের রচিত ইতিহাসের সঙ্গে অন্য কোনো দেশের কৃষ্টির তুলনা চলে না। মহাদেশতুল্য চিন ছড়িয়ে আছে মাঞ্চুরিয়ার তাইগো থেকে দক্ষিণ পশ্চিমের নিরক্ষীয় অঞ্চল পর্যন্ত। তার একদিকে রয়েছে তিব্বতের উঁচু মালভূমি বরফে ঢাকা পর্বত চূড়া; মাঝে এশিয়ার মরু অঞ্চল ও স্তেপ। পূবে বদ্বীপ শ্রেণী ও পীতনদীর অববাহিকার সমভূমি। এক দিকে পীত নদীর পলিতে চিনের প্রথান কেন্দ্র। মাঞ্চুরিয়ার প্রান্ত ঘেঁষে রয়েছে আমূর নদী। পার্বত্য অঞ্চলে বিরাট বনাঞ্চল। পীত নদীর দক্ষিণে ইয়াংসি নদী। এই বিশাল মহাচিনের মিথলজি নিয়ে বলতে যাওয়াটা একাধারে দ্ব্যর্থক ও অতি অভিলাষী বলে গণ্য হতে পারে। গোড়াতেই স্পষ্ট করতে হয় কোন চিন সম্পর্কে উল্লেখ করছি। চিনের মিথলজির প্রাচীনত্ব নিয়ে সন্দেহ নেই, তার পরিচয় পাওয়া গেলে অন্য মিথলজির চেয়ে ভিন্ন হবে, যদি এমন একটা কিছু থাকে। তার মানে এই নয় যে চিনের ইতিহাসে হঠাৎই কোনো ছেদ ঘটল তাতে সমস্ত জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাস ও মিথলজিগত ধারণা পাল্টে গেল। গোড়াতে ছিল সর্বপ্রাণবাদ, তার থেকে কনফুসিয়াসের দর্শন, তারপরে তাওবাদ এবং বৌদ্ধ ধর্ম একে একে চিনে গৃহীত হয়।