লেখক মনে করেন একটি জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস না থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে কিংবা জাতির কাছে অপরাধী থাকতে হবে। সে দায়বদ্ধতা থেকেই লেখক ১৯৯৬ সালে এই জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এর তথ্য সংগ্র শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি মতাদর্শে বিশ্বাসী একদল রাজনীতিবিদ ও কতিপয় রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তার মধ্যে ছিলো জামায়েতে ইসলামী, নেজামে ইসলামী, পিডিপি, মুসলিম লীগের দ্বিধাবিভক্ত অংশ , এন এসএফ, ইসলামী ছাত্রসংঘের সমন্বয়ে শান্তি কমিটি, আলবদর বাহিনী, রাজাকার বাহিনী, আলশামস বাহিনী গঠিত হয়। জেলায় এরা পাকিস্তানি সেনাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অখণ্ডতার নামে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরবাহিনী পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার নামে নিষ্ঠুরতা ও নির্যাতনের নজীর সৃষ্টি করেছিল। তখন মানুষ বেচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। সর্বোপরি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে সাধারণ মানুষ, মুক্তিযোদ্ধারা যে দেশপ্রেম ও বীরত্ব দেখিয়েছেন তা উপস্থাপন করা হয়েছে এ গ্রন্থে। বইটিতে লেখক অধ্যায় ভিত্তিক পয়েন্ট আকারে সব ঘটনার সুন্দর বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে উল্যেখ যোগ্য পয়েন্টগুলো হচ্ছে: ভৌগোলিক বিবরণ ও প্রাসঙ্গিক ইতিহাস, ১৯৪৭ পূর্ব সংগ্রামের ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব ও আন্দোলন সংগ্রাম, সুন্দরবন সাবসেক্টর, শসস্ত্র প্রতিরোধ, মুক্তিযুদ্ধে ব্যক্তি সংগঠনের ভূমিকা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, শহীদদের তালিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে তৎপরতা ইত্যাদি।
হুমায়ুন রহমান ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার পাটিতাবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাতা- মনোয়ারা বেগম, পিতা- আব্দুর রহমান। নয় ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। লোকসাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করছেন। সাহিত্যের অন্যান্য শাখায়ও তার বিচরণ রয়েছে। নিজ গ্রামের পাঠশালায় পড়াশুনা শুরু করেন। বানিয়াকাঠি হেমন্ত পন্ডিতের পাঠশালা থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর দীর্ঘা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পড়াশুনা শুরু করলেও এসএসসি পাস করেন স্বরুপকাঠি উপজেলার বলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। কলেজ জীবন কেটেছে স্বরূপকাঠি কলেজে। এরপর জগন্নাথ কলেজ, সিটি ল কলেজ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বশেষ আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএড করেন।