ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যে সমস্ত সংগ্রামী, বিপ্লবী জীবনবাজী রেখে লড়েছেন, তাঁদের ইতিহাস আজকের তরুণপ্রজন্ম কতটুকুই বা জানে? আর জানবেই বা কি করে, ইতিহাসে যদি ইতিহাস না থাকে তাহলে না জানা দোষের কিছু নয়। ইতিহাসকে লিপিবদ্ধ করে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হয়। আর সেই নিয়ে যাওয়ার কাজটা স্বাধীনতার এত বছর পরেও সম্পূর্ণ হয়নি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা অগ্রভাগে ছিলেন, তাঁদের জীবনসংগ্রাম নিয়ে কমবেশী লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু এই স্বাধীনতা সংগ্রামে নিবেদিত কত অজানা মা-বাবা-ভাই-বোন-আত্মীয়-স্বজন- পাড়া-প্রতিবেশী-বালক-বালিকা তাদের বুদ্ধি, বিচক্ষণতা, সহযোগিতা, আশ্রয়দান ও বিপদের ঝুঁকি নিয়ে বিপ্লবীদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন, পুলিশের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছেন, গোপনে বিপ্লবীদের কাছে সংবাদ পৌঁছে দিয়েছেন- এই সমস্ত অনামী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে তেমন কোন ইতিহাস রচিত হয়নি। স্বদেশপ্রেমের এই ইতিহাসের তথ্য যদি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে না থাকে, তাহলে সে ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। 'যা ইতিহাসে নেই' বইটিতে বিমল মিত্র কিছুটা সেই অজানা ইতিহাস তুলে ধরেছেন। স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সেই অজানা অংশটি তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য 'বিপ্লবীদের কথা প্রকাশনা' বইটি প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করছে। বইটির বানান রীতি হুবহু রাখা হয়েছে। শেখ রফিক নভেম্বর ২০১৪ ইকুরিয়া, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
Bimal Mitra কথাসাহিত্যিক বিমল মিত্রের জন্ম ১৯১২ সালের ১৮ই মার্চ। চেতনা স্কুল ও আশুতোষ কলেজে শিক্ষালাভের পর তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ পাশ করেন ১৯৩৮ সালে । গোড়ায় গান লেখার শখ ছিল । বিখ্যাত গায়করা তাঁর গানে সুর দিয়েছিলেন। পরে তিনি কথাসাহিত্য রচনায় আত্মনিয়োগ করেন। প্রথম জীবনে রেল বিভাগে চাকরি করতেন। তারপর সে গল্প-উপন্যাস প্ৰবন্ধ নিয়ে তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা একশতরও অধিক। বাংলা ১৩৭০ সালে তার সরকার রবীন্দ্র-স্মৃতি পুরস্কারে সংবর্ধিত করেন। এই উপন্যাসটি এখনও পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের বৃহত্তম এবং সর্বোচ্চ মূল্যবান উপন্যাস। তবে সাহিত্য পুরস্কার লাভের থেকেও বিমল মিত্র সম্বন্ধে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল বঙ্গভাষার সাহিত্যিকদের মধ্যে শরৎচন্দ্রের পর তিনিই সর্বভারতীয় সাহিত্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় ছিলেন । তিনি বেগম মেরী বিশ্বাস, সাহেব বিবি গোলাম, কড়ি দিয়ে কিনলাম, একক দশক শতক, পতি পরম গুরু, এই নরদেহ-এপিক উপন্যাসের মাধ্যমে তিনশো বছরের সমাজজীবনের এক বিস্তৃতকালের চালচিত্র বাংলা সাহিত্যকে উপহার দিয়েছেন । ১৯৯১ সালের ২রা ডিসেম্বর তার তিরোধান হয় ।