'সিরাজ-উ-দ্দৌলা' নাটকের পটভূমি বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার তরুণ নবাব মির্জা মুহাম্মদ সিরাজ-উ-দ্দৌলার রাজ্যশাসনের কাল এক বছর ষোলো দিন (১৯ জুন ১৯৫৬ থেকে ২ জুলাই ১৭৫৭)। এই সময় পরিসরে নানা প্রতিকূল ঘটনা, যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং ষড়যন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে 'সিরাজ-উ-দ্দৌলা' নাটকটি রচিত হয়। এ-নাটকে চার অঙ্কে মোট বারোটি দৃশ্যে কাহিনিকে সাজিয়েছেন নাট্যকার। সংঘটিত ঘটনাগুলোকে ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করে কাহিনির মধ্যে একটা অবিচ্ছেদ্য গতি দান করার চেষ্টা করেছেন লেখক, যা নাটকটিকে ঐতিহাসিক সত্যের খুব নিকটবর্তী করেছে। 'সিরাজ-উ-দ্দৌলা' নাটকে প্রধান-অপ্রধান মিলে প্রায় চল্লিশটিরও বেশি চরিত্র আছে। চরিত্রের সংলাপ এবং গতিবিধি বাস্তবানুগ করে চিত্রিত করা হলেও এ-কথা সত্যি যে, নাটকের চরিত্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক চরিত্রের হুবহু মিল থাকার কথা নয়। বাস্তবে নবাব সিরাজ-উ-দ্দৌলা বাংলায় কথা বলতেন না এবং রবার্ট ক্লাইভও ইংরেজি-বাংলা মিশিয়ে কথা বলতেন কিনা সন্দেহ। উর্মিচাঁদ, ঘসেটী বেগম, রাজবল্লভ এ-নাটকে যেভাবে পদচারণা করেছেন, বাস্তবে তাদের আচরণ হয়ত ঐ রকম ছিলো না। নাটক রচনা করতে গিয়ে নাট্যকার যথেষ্ট কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন। কারণ তিনি নাটকের বশ, ইতিহাসের দাস নন।