সৌরজগৎ এক কথায় বলতে গেলে সূর্য আর সূর্যের চারপাশে পাক খেতে থাকা গ্রহদের নিয়ে যে জগৎ সেটাই সৌরজগৎ। অবশ্য গ্রহ ছাড়াও সৌরজগতে রয়েছে উপগ্রহ, গ্রহাণুপুঞ্জ, ধূমকেতু, ধূলিকণা আর প্রচুর পরিমাণে গ্যাস। সৌরজগতের সমস্ত কিছুই সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। আর অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি যে, এই বিশাল সৌরজগতের শতকরা প্রায় আটানব্বই ভাগ বস্তুই রয়েছে সূর্যের ভিতরে। বস্তু যত বড় হবে তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও তত বেশি হবে। সূর্য অত বিরাট বলে তার প্রচণ্ড মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সৌরজগতের বাকি সব কিছুকেই নিজের দিকে টানতে থাকে। একই সময়ে ঐ বিশাল বস্তুগুলো, যারা নাকি প্রচণ্ড বেগে ছুটে চলেছে, তারাও চেষ্টা করছে সূর্যের কাছ থেকে ছুটে দূরে চলে যাবার জন্য। সূর্যের অমন ভিতরে টেনে নেয়া আর বাকিদের বাইরে ছুটে যাওয়ার এই টানাটানির ফলেই গ্রহ উপগ্রহগুলো মহাশূণ্যে হারিয়ে না গিয়ে মাঝপথে ভেসে থাকে। গ্রহগুলোর কোনটা কঠিন উপাদানে তৈরি, কোনটা তৈরি গ্যাস বা বায়বীয় পদার্থ দিয়ে। সৌরজগতের গ্রহগুলোকে তাদের উপাদানের ওপরে ভিত্তি করে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। সূর্যের কাছাকাছি চারটি গ্রহ মূলত কঠিন পদার্থ দিয়ে তৈরি বলেই এদের বলা হয় টেরিস্ট্রিয়াল প্লানেট বা পার্থিব গ্রহ। বুধ, শুক্র, পৃথিবী আর মঙ্গল এই চারটি গ্রহের মূল অংশ তৈরি কঠিন পদার্থ দিয়ে। সৌরজগতের বাকি গ্রহগুলো অর্থাৎ বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস আর নেপচুন প্রধানত তৈরি হয়েছে গামসীয় পদার্থ দিয়ে। এগুলো আয়তনের দিক থেকে অবিশ্বাস্য রকমের বিশাল। সেই কারণে অনেক সময় এগুলোকে গ্যাসীয় দানব বলেও উল্লেখ করা হয়।