সাকসেস থ্রো এ পজেটিভ মেন্টাল এটিটিউট’ বইয়ের কিছু কথাঃ একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সাফল্য অর্জন করুন বইটি এমন নয় যে অনেক মনীষীদের উক্তি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে ভরা। এমনকি এটা অনুপ্রেরণার উক্তিতেও যে ভরপুর তা নয়। অনেকের কাছে এটা সত্য নাও লাগতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এটা এমন এক বই যা পাঠ করলে আপনি আপনার দুই পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াবেন এবং একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ আরম্ভ করবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সাফল্য অর্জন করছেন। কথাটা জাদুর মতো মনে হলেও এটা পুরোপুরি সত্য।
এই বইটি পুরোপুরি বাস্তবতা কেন্দ্রিক। বইটিতে বিশ্বের বড় বড় অসংখ্য লোকজনের সাফল্য যাত্রা সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে; তারা কী ধরনের বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে এবং কীভাবে সেগুলোর মোকাবিলা করেছে তাও বলা হয়েছে। এসব ঘটনাবলি থেকে নেপোলিয়ন হিল কিছু সাধারণ সূত্র আবিষ্কার করেন যা যেকোন মানুষই তার জীবনে কাজে লাগাতে পারে। আর কেউ যদি এই সূত্রগুলো তার বাস্তব জীবনে কাজে লাগায় তবে তার জীবনে আমূল পরিবর্তন ঘটবে, যা অবশ্যই ইতিবাচক। বইটি থেকে আমরা অজস্র ভালো জিনিস শিখতে পারবো। কীভাবে
=>অধ্যবসায় গঠন করতে হয় =>নিজের ভেতরের ভীতি দূর করতে হয় =>নিজের জীবনে যা চাই তা অর্জন করতে হয় =>নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা করতে হয় =>প্রতিটি বাধার সামনে দৃঢ় পদে দাঁড়াতে হয় =>অলসতাকে পরাস্ত করতে হয় (আপনি যদি অলস হয়েও থাকেন তবে বইটি পাঠের পর আর কখনো পূর্বের ন্যায় অলসতা দেখাতে পারবেন না) =>জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে চেষ্টা করবেন =>আপনার কাজকে উপভোগ করবেন =>ইতিবাচক মনোভাব দ্বারা ব্যর্থতার মুখোমুখি হবেন =>জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন =>খারাপ কিছুর সম্মুখীন হলে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখবেন =>নিজেকে সৎভাবে বিচার করবেন =>বেঁচে থাকার আসল মানে খুঁজে পাবেন . এবং আরও অনেক কিছু আপনি যদি আপনার জীবনকে উপভোগ করতে চান বা জীবনে কিছু পেতে চান তবে এই বই আপনাকে সেই দিকেই পরিচালিত করবে। আপনি এই বইকে আপনার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে কাজে লাগাতে পারেন। আপনি জীবনে সুখী হন এবং সফলতা লাভ করেন এই কামনায় শেষ করছি। -ফজলে রাব্বি
নেপোলিয়ন হিল অলিভার নেপোলিয়ন হিল (২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ – ৮ নভেম্বর, ১৯৭০) ব্যক্তিগত উন্নয়নের একজন আমেরিকান লেখক। তিনি সুপরিচিত তার বই 'চিন্তা করুন এবং ধনী হোন' (১৯৩৭) এর জন্য। বইটি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ১০টি আত্ম উন্নয়নমূলক বইয়ের একটি। তিনি ১৯০৮ থেকে ১৯২৮ পর্যন্ত টানা বিশ বছর আমেরিকার সবচেয়ে ধনী ৫০০ জন ব্যক্তির ওপর গবেষণা চালিয়েছেন এটা জানার জন্য যে কেন তারা সফল এবং অন্যরা ব্যর্থ। তিনি সাফল্য অর্জনের জন্য যে সূত্রাবলি আবিষ্কার করেন তা পুরোপুরি অব্যর্থ। আজকে বর্তমানেও যেকেউ সূত্রাবলি কাজে লাগাতে পারে এবং নিজের জীবনে সাফল্য, সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।
ডব্লিউ. ক্লেমেন্ট স্টোন উইলিয়াম ক্লেমেন্ট স্টোন (৪ মে, ১৯০২ – ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০২) ছিলেন একাধারে একজন ব্যবসায়ী, লোকহিতৈষী ব্যক্তি ও আত্ম উন্নয়নের নতুন ধারার একজন লেখক।
স্টোন একজন বাস্তব উদাহরণ যিনি একদম মাটি থেকে উঠে ধনী হয়েছেন। তাঁর বাবা ১৯০৫ সালে মারা যান। মাত্র সাত বছর বয়স থেকে তিনি সংবাদপত্র বিক্রি আরম্ভ করেন এবং পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন একজন ধনী ও মহান ব্যক্তি। তাঁর অন্যতম সফলতা হচ্ছে অগ মানডিনো, যিনি একজন মদ্যপায়ী ছিলেন, তাকে স্টোন তাঁর ছত্রছায়ায় নিয়ে একজন সফল ব্যক্তি হয়ে উঠতে সহায়তা করেন। অগ মানডিনো পরবর্তীতে সাকসেস ম্যাগাজিনের সম্পাদক হন।
আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা অলিভার নেপোলিয়ন হিল আত্মোন্নয়নধর্মী রচনা লেখকদের মাঝে প্রথমদিককার একজন। ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সফলতা লাভের বিভিন্ন দিক লেখনীতে তুলে এনে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল আত্মোন্নয়নমূলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হিলের। নেপোলিয়ন হিলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট ভার্জিনিয়ায় ২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ সালে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ল'স্কুলের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। এর আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে, সেই ১৩ বছর বয়স থেকে। ১৯০৮ সালে এন্ড্রু কার্নেগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হিলের জীবনে আসে বিশাল পালাবদল। তখনকার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি কার্নেগী তাকে পরামর্শ দেন ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে ও তাদের সাফল্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে। এরপর তিনি বিশ্ববিখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এই তালিকায় আছেন হেনরি ফোর্ড, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলসহ আরো অনেকে। এমন ৪৫টি সাক্ষাৎকারের লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম রচনা 'দ্য ল অব সাকসেস'। এই বইয়ে তিনি সাফল্যের সূত্রকে ব্যখ্যা করেছেন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, পুঁজিবাদের সমন্বয়ে মূর্ত দর্শন দিয়ে। নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ সাফল্যগাঁথার চেয়ে সাফল্যের পেছনের সূত্র সহজীকরণের পাথেয় হিসেবে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিখ্যাত এই লেখকের চরিত্রের কিছু রহস্যময় বৈশিষ্ট্য মানুষকে ভাবিয়েছেও বটে। তিনি দাবি করতেন, আত্মাদের সাথে তাঁর যোগাযোগ আছে, তাঁকে দেয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাফল্যের মন্ত্র। হিল এই বিষয়টি তাঁর ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বই 'গ্রো রিচ(!) উইথ পিস অব মাইন্ড' এ খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর জীবনের অজানা কিছু অধ্যায় উঠে এসেছে গবেষকদের চোখে। তবে নেপোলিয়ন হিল এর বই সমগ্র বিতর্কিত ব্যক্তিজীবনের প্রভাবেও জনপ্রিয়তা হারায়নি। তাঁর রচিত 'থিংক এন্ড গ্রো রিচ' সর্বকালের সেরা আত্মোন্নয়নমূলক দশটি বই এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ হলো 'অ্যাটিটিউড মেন্টাল পজিটিভা', 'দ্য মাস্টার কি টু রিচেস', 'সাকসেস হ্যাবিটস' ইত্যাদি। বিতর্কিত চরিত্রের এই লেখক ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর বেশ রহস্যজনকভাবে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি পারকিনসন্স সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন।