রুমি প্রচারবিমুখ। অথচ প্রচারিতব্য। প্রকৃত লেখক। প্রতিষ্ঠা পাবার যোগ্য। তার শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত। তিনি একাধিক ভাষার লেখক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের সাহিত্য-আকাশে মেঘের ঘনঘটা। কালো মেঘ। ধোঁয়া ধোঁয়া। ধুম্রকুন্ডল। অ-লেখকদের ভিড়। প্রতিষ্ঠিত লেখকদের বিমুখতা। মিডিয়া জগৎ প্রভাবিত। সামনে চোখ মেলতে পারছে না পত্র-পত্রিকা। যারা প্রতিষ্ঠিত লেখক হয়ে সমপর্যায়ের লেখককে তৈরী করবেন, তারা এ প্রসঙ্গে স্ববিরোধী। তারা প্রতিদ্বন্দী। অ-লেখকেরা ঈর্ষাপরায়ণ। প্রকৃত লেখকের বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত। তারা নিজেরাই তঙ্কর লেখক। অথচ ঐ দোষটা তারা সুকৌশলে চাপিয়ে দিচ্ছে প্রকৃত লেখকদের ঘাড়ে। এজন্য প্রকৃত লেখক দিশেহারা। বিভ্রান্ত পাঠক সমাজ। সাহিত্যাঙ্গণের এ ট্রাডিশন চিরকালের। শুধুমাত্র মাতৃভাষায় স্বল্পজ্ঞান, বিশেষ একটা সাবজেক্ট নিয়ে লেখা, সস্তা সাহিত্য বাজারজাত করা, চটকদারি একটা বিষয়ের বিদ্রোহী, বিপ্লবী কবি, জীবন পলাতক কবি, চুরি করা কাহিনীর ঔপন্যাসিক, কোনোরকমে টেনে-টুনে একজন ছোট গল্পকার, চটকদারী ছড়াকার ও লেখক বাংলা সাহিত্যের আকাশ পরিমÐলে ধোঁয়াশার আবরণ সৃষ্টি করে রেখেছে। এ ধোঁয়াবরণ মুছে ফেলে প্রকৃত লেখকের লেখা পাঠ করতে পাঠকদের মনে রাখতে হবে, একজন প্রকৃত লেখক হবে সার্বজনীন লেখক। তিনি কোনো বিশেষ ভাষার বা সাবজেক্টের কবি-সাহিাত্যক নন। ধর্মকেন্দ্রিক বিশেষ নিয়মের মধ্যে তিনি আবদ্ধ নন। তিনি সকল ভাষা, সকল জাতি, সকল ধর্মের ও সকল মানুষের লেখক। বস্তাভরা লেখার দলিল-দস্তাবেজ আর বিশেষ দাগনম্বর খতিয়ান নম্বর দিয়ে বিশ্বসাহিত্যের মাঠে সাহিত্য কর্মের জমা-জমির মালিক হওয়া যাবে না। সাহিত্য রচিত হবে গন্ডীবদ্ধ সীমানা পেরিয়ে বিপুলাকার মাঠের পরিধি নিয়ে। প্রকৃত লেখকের দৌঁড় ১০০ মিটিার-৪০০ মিটারের মতো নির্দিষ্ট নয়, তা ম্যারাথন দৌঁড় বা তার চেয়েও অধিক। বিশেষ বিদ্রোহ, বিশেষ রিমান্ড, বিশেষ ট্রাইবুনাল তার জন্য নয়। সাহিত্যের আকাশে উড়তেই হবে।