একটি সমাজের বাঁক বদলের জন্য নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। যুগে যুগে যত বিপ্লব ও বিজয়গাঁথা রচিত হয়েছে, এর মূলে রয়েছে নারীর বহুধা অবদান। সেই নারীই যখন সমাজ—বিচ্যুত হয়ে উদাস জীবনযাপনে মত্ত। উম্মাহর কথা বিস্মৃতির আড়ালে রেখে আধুনিকতার জলাশয়ে সাঁতরিয়ে বেড়াচ্ছে, তখন একমুঠো আশার আলো নিয়ে হাজির হয়েছেন ড. লায়লা হামদান। তিনি নীড়ছাড়া নারীকে শুনিয়েছেন সোনালী যুগের বিজয়—উপাখ্যান। দেখিয়েছেন পারিবারিক বন্ধনে থেকেও কীভাবে তারা উম্মাহর ফিকির ও সংকট নিরসনে কাজ করেছেন। কীভাবে মনোবল ও উৎসাহ দিয়ে দিয়ে নতুন প্রজন্মকে ঢেলে সাজিয়েছেন। ড. লায়লা হামদান এই বই লিখেছেন মধ্যপ্রাচ্যে বসে। যেখানে নারিত্বের দাসত্ব এবং নারীদের গন্তব্যহীন পথচলা এক আটপৌরে ব্যাপার। যেখানে রুচি ও নৈতিকতার বিকৃতি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি। ফলে তিনি নারীর সংকট নিজ চোখে দেখেছেন। সংকট মোকাবেলায় তার কাজ এবং দায়িত্ব কি হবে, কীভাবে চললে সুখের সন্ধান পাবে নারী, কোন পথে পা বাড়ালে এবং কী করলে উম্মাহর সফলতা আসবে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। সে আলোকে পথ বাতলে দিতে প্রয়াসী হয়েছেন। এ বই ছোট—বড়, তরুণী—যুবতী, স্ত্রী, মা ও বৃদ্ধা সবার জন্যই লেখা। যেই পড়বে মনে করবে কথাগুলো আমাকেই উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। আমি আশাবাদী, এ বই পড়ে নারী তার কাজ বুঝে নিতে পারবে। গন্তব্য চিনে পথ চলতে সামনে এগুবে। নারীর যেমন বইটি পড়া উচিত। পুরুষের জন্য আরও বেশি জরুরি। কারণ, নারীদের কাজ, দায়িত্ব ও তাদের বিষয়াদি বুঝে সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারবে। বইয়ের মূল নাম ছিল ইলাইকি আনতি। এর বাংলা নাম রাখা হয়েছে “নারীর জন্য নসিহা"। নাম নির্বাচনে কবি ও গবেষক মুসা আল হাফিজের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। তিনি উপযোগী একটি সুন্দর নাম চয়ন করে দিয়েছেন। সবশেষে কথা হচ্ছে, এ বই নারীর আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধানের পথ দেখাতে ব্রতী। দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে প্রয়াসী। সুখের ঠিকানা বাতলে দিতে সপ্রচেষ্ট। যাদের জন্য বইটি লেখা তারা যদি এর আলোকে উজ্জীবিত হয়। উম্মাহর উপকারে কাজ করতে প্রতিযোগী হয় তবেই আমাদের শ্রম স্বার্থক হবে বলে মনে করবো। আল্লাহ কবুল করুন। আমিন।