পবিত্র কোরআন আরবি ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছিল, কারণ রাসূল (সা.) ও তৎকালীন আরব ভূখণ্ডের মানুষ ছিলেন আরবি ভাষাভাষী, যাতে পবিত্র কোরআন তাদের কাছে সহজ বোধগম্য হয়। আমরা বাংলা ভাষাভাষীগণ পবিত্র কোরআন আরবি ভাষায় তেলাওয়াত করি, সওয়াব লাভ করি ঠিকই, কিন্তু এর মর্মবাণী অনুধাবন করতে সক্ষম হই না। সেজন্য গোটা কোরআনে মানুষের জন্য আল্লাহর কী কী উপদেশ, আদেশ ও নিষেধসমূহ অবশ্য পালনীয় তা সঠিকভাবে জানা ও বোঝার জন্য সমগ্র কোরআনকে বাংলায় বারবার পড়া এবং এর মর্মবাণী অনুধাবন করা প্রত্যেক মুমিনের জন্য অবশ্য কর্তব্য, যদি তিনি নিজে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চান এবং স্বজনদের বাঁচাতে চান। সমগ্র কোরআন একবারে নাজিল হয়নি। বরং নবীজির নুবওয়াত লাভের পরবর্তী সুদীর্ঘ ২৩ বছরে ধরে বিভিন্ন পরিস্থিতি ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ কতৃক কোরআনের বিভিন্ন আয়াতসমূহ ক্রমশ নাজিল হতে থাকে। ফলে কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু সর্ম্পকে যদি কেহ পূনাঙ্গরূপ ধারণা লাভ করতে চান, তাহলে তাকে উক্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সুরায় বর্ণিত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা উক্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক যাবতীয় সকল আয়াতসমূহের একত্রীভূত করনের মাধ্যমেই কেবল ঐ বিষয় সর্ম্পকে পুর্ণাঙ্গ ধারণা বা জ্ঞান লাভ করা সম্ভব। উদাহরণ স্বরূপ : আপনি যদি ‘জাহান্নামের শাস্তি’ বিষয় সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে সমগ্র কোরআনে বিভিন্ন সুরায় জাহান্নামের শাস্তি সর্ম্পকে বিভিন্ন সময়ে যত আয়াতসমূহ নাজিল হয়েছে, তা বিভিন্ন সুরা থেকে তুলে এনে একত্রীভূত করনের মাধ্যমেই কেবলমাত্র আপনি এ সর্ম্পকে পরিপূর্ণ জ্ঞান বা ধারনা লাভ করতে পারবেন। এই বইখানাতে সমগ্র কোরআনে মহান আল্লাহ মানুষের জন্য যত উপদেশ/নির্দেশ দিয়েছেন, তা প্রত্যেক সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু কেন্দ্রিক সমজাতীয় সকল আয়াতসমূহকে একত্রিত করে জ্ঞানপিপাসু, লেখক ও গবেষকদের জন্য বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে করে এর থেকে সংশ্লিষ্ট সকলেই কম-বেশি উপকৃত হতে পারবেন। বইটিতে সর্বমোট ১৩০টি অধ্যায় ও অন্যান্য ছোট/বড় ৮৩৫টি অনুচ্ছেদে কোরআনের সকল গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য আয়াতসমূহ উপস্থাপিত হয়েছে।