মি. স্টিফেন তার সমগ্র জীবনব্যাপী লক্ষ মানুষকে বিশ্বজনীন নীতিসমূহের শক্তির প্রতি অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি শেখাতে চেয়েছেন—সকল ব্যক্তির উচিত জীবনের ৩টি গুরুত্বপূর্ণ চলমান প্রক্রিয়ার সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করা: নিজের পজেটিভ উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখা, যেসব ভুল সে নিজের অজ্ঞাতে করে আসছিল সেগুলো শনাক্ত ও সংশোধন করা এবং বিবেকের প্রতি বিশ^স্ত থাকা। এই পদক্ষেপগুলো কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভুক্তভোগীমাত্রই জানেন! কিছু মানুষের মধ্যে বংশানুক্রমিকভাবে অনেক ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। তবে অধিকাংশ মানুষ দুর্দশায় পতিত হলে বুঝে উঠতে পারেন না—তার জীবনে কেন এমনটি ঘটছে। তারা হতাশায় জর্জরিত হন এবং ভাল—মন্দের মানদণ্ড হারিয়ে হালবিহীন জলযানের মতো অকূল সাগরে লক্ষহীনভাবে ভাসতে থাকেন। পক্ষান্তরে, যারা জীবনের সমস্যাগুলোকে সততা ও একাগ্রতার সাথে মোকাবেলা করার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন— মন্দ—পরিস্থিতি তাদের গতিরোধ করতে পারে না। “দা ৭ হ্যাবিটস অফ হাইলি এফেক্টিভ পিপল” বইটি পড়ে পাঠক উপরোক্ত অপরিহার্য বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জেনে হয়তো নিজের জীবনের ইতিবাচক রূপান্তর ঘটাতে পারবেন।
স্টিফেন আর. কোভি এর পূর্ণ নাম স্টিফেন রিচার্ডস কোভি। তিনি জন্ম নিয়েছিলেন ১৯৩২ সালের ২৪শে অক্টোবর। জন্মগতভাবে তিনি একজন আমেরিকান। তিনি একাধারে একজন শিক্ষক, লেখক, বক্তা ও ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর বক্তব্যগুলো মূলত অনুপ্রেরণাদায়ী, যাকে আমরা বর্তমানে ‘মোটিভেশনাল স্পিচ’ নামেই বেশি চিনি। স্টিফেন আর কোভি এর বই সমূহ হচ্ছে ফার্স্ট থিংস ফার্স্ট, দ্য লিডার ইন মি, দ্য এইটথ হ্যাবিট, প্রিন্সিপ্যাল-সেন্টার্ড লিডারশিপ, দ্য থার্ড অল্টারনেটিভ ইত্যাদি। তাঁর প্রথম বই ছিল স্পিরিচুয়াল রুটস অফ হিউম্যান রিলেশনস (১৯৭০)। এটি ডেসেরেট বুক কোম্পানি থেকে প্রকাশ পায়। তাঁর পরবর্তী লেখাগুলোর পূর্বাভাস হিসেবে এই বইটিকে ধরা যায়। স্টিফেন আর. কোভি এর অনুবাদ বইগুলোর মাধ্যমে তাঁর অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্য বিশ্বজোড়া মানুষের মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলা ভাষাতেও তাঁর বই অনূদিত হয়েছে। তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় বই হলো ‘দ্য সেভেন হ্যাবিটস অফ হাইলি ইফেক্টিভ পিপল’। স্টিফেন আর. কোভি এর বই সমগ্র বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত, কারণ তিনি তাঁর লেখার মধ্য দিয়ে মানুষকে অনুপ্রেরণার ছোঁয়া দিতে পেরেছেন। ১৯৯৬ সালের টাইমস ম্যাগাজিন বিশ্বের ২৫ জন সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে তাঁকে রাখে। ২০০৮ সালে তিনি স্টিফেন কোভি অনলাইন সম্প্রদায় গড়ে তোলেন। ২০১২ সালের ১৬ জুলাই কোভি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময়ে তিনি উটাহ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে জন এম. হান্টসম্যান স্কুল অফ বিজনেসের অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর পড়াশোনাও ব্যবসায় অনুষদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তবে একটা সময় আমেরিকান সেলফ হেল্প বইগুলো পড়ে তাঁর মাথায় চিন্তা আসে যে, এভাবে তিনি অনেককেই হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারবেন। তিনি পিটার ড্রাকার ও কার্ল রজার্সের দ্বারা মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনেকটা প্রভাবিত ছিলেন।