বাংলা বিহার উড়িষ্যা তথা ভারতবর্ষের ইতিহাসে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মহা উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের নাম। কি স্বল্পকালীন দেশ শাসনে, কি হানাদার ইংরেজদের বিরুদ্ধে বীরত্বসূচক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে তিনি অমর হয়ে আছেন। চির সংগ্রামী এই বীর আমাদের তরুণ সমাজের আরাধ্য পুরুষ। সব লড়াইয়ের যুদ্ধে তিনি হয়তো বিজয়ী হতে পারেননি, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্দমনীয় লড়াই সংগ্রামে আর কুচকক্রী ইংরেজ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে সাহসীকতাপূর্ণ, বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ সংগ্রাম ও যুদ্ধে তিনি ছিলেন অকুতোভয়। তিনি এই ইংরেজ বিতাড়ণে যে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন পলাশীর সেই অপয়া প্রান্তরে তার সেনাপতি কুচক্রী ষড়যন্ত্রী মীর জাফর আলী খান ও ইংরেজ শক্তির সহায়ক হিন্দু বেনিয়া গোষ্ঠী যদি বেঈমানী না করতো, হয়তো বাংলা তথা ভারতবর্ষের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ইংরেজ-শাসনের সূচনা হয় । সিরাজউদ্দৌলা তার নানা নবাব আলীবর্দী খান-এর কাছ থেকে ২২ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তার সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে। এ গ্রন্থে সিরাজের বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক ও তার পরাজয়ের কারণগুলো তুলে ধরা হয়েছে এবং তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। তিনি কেন পরাজিত হয়েছিলেন এবং এর পরের প্রায় ২০০ বছরের বাংলার হাল কি হয়েছিল এই বইয়ে তাও বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে।