আপনি উল্লেখযোগ্য কিছু শিখতে যাচ্ছেন। তা হলো – আপনার জীবন পরিবর্তনে মাত্র পাঁচ সেকেন্ড সময় প্রয়োজন। কথাটি মনভোলানো চটক বলে মনো হলো, তাই না? তবে এটি কোন মনভোলানো কথা নয় বা কোন বিজ্ঞাপনও নয়। এটি হলো বিজ্ঞান। আমি আপনাকে প্রমাণ করে দেখাবো। আপনি পাঁচ সেকেন্ডের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জীবন পরিবর্তন করতে পারেন। আমরা বলতে পারি, জীবন পরিবর্তনের এটিই একমাত্র উপায়। পাঁচ সেকেন্ড নিয়ম আসলে কী? এটি কীভাবে কাজ করে? এবং এটি কীভাবে বিশ্বব্যাপী মানুষদের জীবনে রূপান্তর এনেছে? এসব প্রশ্নের উত্তরই ‘দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল’। এই নিয়ম খুব সহজবোধ্য এবং এর প্রভাব সুগভীর। যে কোন পরিবর্তনের রহস্য এটি। নিয়মটি জানার পর আপনি তাৎক্ষনিকভাবে এটি প্রয়োগ করতে পারেন। বেঁচে থাকা , ভালবাসা , কাজ করা এবং প্রতিদিন অতি আত্মবিশ্বাস ও সাহসের সাথে কথা বলার জন্য এই নিয়মটি আপনাকে সহায়তা করবে। নিয়মটি আপনি একবার প্রয়োগ করুন, এরপর নিয়মটিই আপনার প্রয়োজন বুঝে প্রয়োজনে হাজির হবে। জীবনের খুব বাজে সময়ে দাঁড়িয়ে আমি পাঁচ সেকেন্ড নীতিটি তৈরী করেছিলাম। তখন আমার কাছ থেকে সবকিছু দূরে সরে যাচ্ছিল। সবকিছু মানে সবকিছু। আমার বৈবাহিক জীবন , আর্থিক অবস্থা , ক্যারিয়ার , প্রাণশক্তি ও উদ্দীপনা – সবকিছু ধূলিস্যাৎ হচ্ছিল। আমার সমস্যা এতো প্রকট ছিল , প্রতিদিন সকালে বিছানা ছাড়তে সংগ্রাম করতে হতো। আর এভাবেই এই নিয়মটির যাত্রা শুরু হয়। নিয়মটির মাধ্যমে আমি প্রতিদিন অ্যালার্ম বন্ধ করে আবার বিছানায় পড়ে থাকার মতো অবস্থা প্রতিরোধে সক্ষম হই। সাত বছর আগে যখন আমি প্রথম এই নিয়মটি ব্যবহার শুরু করি , তখন ভেবেছিলাম নিয়মটি নিতান্তই অর্থহীন। এর বিশেষ কোন মূল্য নেই। আমার ধারণাও ছিল না , আমি এমন একটি নিয়ম উদ্ভাবন করেছি যেটি আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। পাঁচ সেকেন্ড নিয়ম ও পাঁচ সেকেন্ড এর সিদ্ধান্ত আমার জীবনে অবিশ্বাস্য কিছু বিষয় সৃষ্টি করলো। আমি জেগে উঠলাম। আমি শুধু জেগেই উঠলাম না , আমি সম্পূর্ণ জীবন জাগিয়ে তুললাম। সমস্ত বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নে আমি এই নিয়মটি প্রয়োগ করলাম। আমার আত্মবিশ্বাস থেকে শুরু করে আমার আয় , বিয়ে থেকে ক্যারিয়ার এবং উৎপাদনশীলতা ও মাতৃত্ব ভালোভাবে চলতে শুরু করলো। আগে আমার আর্থিক দৈন্যতা ছিল। সেটি কাটিয়ে উঠলাম। আয় বেড়ে দাঁড়ালো সাতটি সংখ্যায়। আমার স্বামীর সাথে যেখানে দ্বন্দ চলছিল, সেখানেই আমরা বিশ বছরের বৈবাহিক জীবন উদযাপন করলাম। আমি নিজেকে দুঃশ্চিন্তামুক্ত করতে পেরেছিলাম , দুটি ছোট ব্যবসা তৈরী করে বিক্রিও করেছিলাম , সিএনএন ও সাকসেস ম্যাগাজিনে চাকুরী পেয়েছিলাম এবং বর্তমানে আমি বিশ্বের অন্যতম চাহিদা সম্পন্ন স্পিকার। পাঁচ সেকেন্ড নিয়ম ছাড়া আমি নিজেকে এতোটা নিয়ন্ত্রনক্ষম , সুখী ও স্বাধীন হিসেবে অনুভব করতে পারতাম না। পাঁচ সেকেন্ড নিয়ম আমার সমস্ত কিছু পরিবর্তন করেছিল একটিমাত্র বিষয় শিখিয়ে। তা হলো , কীভাবে পরিবর্তিত হতে হয়। প্রশ্নটির উত্তর প্রদান করেছিল পাঁচ সেকেন্ড নিয়ম। নিয়মটির মাধ্যমে আমি অতিচিন্তা মুক্ত হই। নিজেকে পর্যবেক্ষণ করা , নিজের মাঝে উপস্থিত থাকা এবং উৎপাদনশীলতায় আমি নিয়মটি ব্যবহার করেছি। কীভাবে নিজেকে নিয়ে সন্দেহ দূর করা যায় এবং নিজের উপর , নিজের আইডিয়া ও সক্ষমতায় বিশ্বাস স্থাপন করা যায় তা শিখিয়েছে এই নিয়মটি। অন্যদের জন্য নয় বরং নিজের জন্যই একজন ভাল ও সুখী মানুষে পরিণত হওয়ার মতো মানসিক দৃঢ়তা প্রদান করেছে নিয়মটি। নিয়মটি আপনার জন্যও এই সহায়তাগুলো করতে পারে। আর সে কারণে আমি আপনাদের সামনে নিয়মটি নিয়ে এসেছি, আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। পরবর্তী কয়েকটি অধ্যায়ে আপনি এই নিয়মের পেছনের গল্প জানতে পারবেন , এটি কী , কীভাবে কাজ করে এবং এর সাথে কোন বৈজ্ঞানিক সম্পৃক্ততা আছে কিনা , এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। কীভাবে পাঁচ সেকেন্ড এর একটি সিদ্ধান্ত ও সাহস আপনার জীবন পরিবর্তন করে দিতে পারে , আপনি সে সম্পর্কে জানবেন। সুস্বাস্থ্যবান , সুখী এবং কাজে অধিক উৎপাদনশীল ও কার্যকর হওয়ার পাঁচ সেকেন্ড এর নিয়ম জানবেন গবেষণা সমৃদ্ধ বর্ণনা থেকে। দুঃশ্চিন্তা ও উদ্বেগ দূর করা, জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া ও যেকোন ভয় দূরীকরণে পাঁচ সেকেন্ড এর নিয়ম আপনাকে পথ দেখাবে। এটিই শেষ নয়। আপনি অনেক প্রমাণ প্রত্যক্ষ করবেন। যারা পাঁচ সেকেন্ড এর নিয়ম ব্যবহার করে অগ্রগতি লাভ করেছেন , নিয়মটির ব্যাপারে তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট ও আমাকে প্রদান করা বিভিন্ন বার্তা এই গ্রন্থে উঠে এসেছে।