নিজের মধ্যে ইলম ধারণ করবার বিবেচনায় সমাজে তিন শ্রেণির লোক রয়েছে। প্রথমত, রাসেখ ফিল ইলম তথা কোনো শাস্ত্রে গভীর পাণ্ডিত্য অর্জনকারী আলিম, যিনি দীর্ঘ সময় বিজ্ঞ আলিম উসতাদের বিশেষ সান্নিধ্যে থেকে দীনি ইলমের বিশেষ কোনো শাখায় পরিপক্কতা অর্জন করেছেন, ইলমি সমস্যার সমাধান দেওয়ার যোগ্যতা যার রয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে দীনি দিকনির্দেশনা প্রদান করার যিনি উপযুক্ত। এই শ্রেণিটিই সমাজের প্রাণকেন্দ্র। দীনি ও ইলমি সমস্যার সমাধানে তাদের দ্বারস্থই হওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, মাদরাসার ওই সমস্ত শিক্ষার্থী, যারা একটা দীর্ঘ সময় ধরে যদিও মাদরাসার কোনো বিশেষ পাঠ্যক্রম শেষ করেছেন; কিন্তু কোনো একক শাস্ত্রে ‘রুসুখ” বা গভীরতা অর্জন করেননি; এদের উচিত—ইলমি বিষয়ে, বিশেষ করে ফতোয়া প্রদান করা থেকে একেবারেই দূরে সরে থাকা, তারা বরং নিয়োজিত থাকবে নিজের ও অন্যদের বাস্তব জীবন সুন্দর থেকে সুন্দরতর করবার প্রচেষ্টায়৷ তৃতীয়ত, এই দুই শ্রেণির বাইরে যারা আছেন। জাগতিক শিক্ষায় তিনি যত বড়ই ডিগ্রিধারী হোন না কেন কিংবা তার ব্যক্তিগত অধ্যয়নের পরিধি যত দীর্ঘই হোক না কেন, তাদের উচিত নিজেকে পূর্ণরূপে কোনো বিজ্ঞ আলিমের কাছে সঁপে দেওয়া৷ অন্তত ইলমি ও দীনি বিষয়ে আলিমের মুখাপেক্ষী থাকা তাদের জন্য আবশ্যক। দীনি বিষয়ে মতামত দেওয়া কিংবা আলিমদের সাথে বাহাস-বিতর্কে লিপ্ত হওয়ার কোনো অধিকার তাদের নেই। আবার দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত অনেকে এমন রয়েছেন, যাদের ইলমি অবস্থান সাধারণ লোক থেকে খুব বেশি ভিন্ন নয়। তাদেরও দীনি বিষয়ে পরিপূর্ণ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত৷ সে নিজেকে সান্ত্বনা দিবে যে, তার কর্মক্ষেত্র ইলমের ময়দান নয়৷ শেষোক্ত দুই শ্রেণির উচিত ইমাম সুফিয়ান বিন উয়াইনা রহিমাহুল্লাহর কথাটি হৃদয়ে গেঁথে নেওয়া৷ তিনি বলেন : التسليم للفقهاء سلامة للدين নিজেকে ফকিহদের কাছে সঁপে দিলেই নিরাপদ থাকবে আমার দীন।