নেপোলিয়ন হিলের থিঙ্ক অ্যান্ড গ্রো রিচ ব্যাবসায়-বাণিজ্যে সর্বকালে সর্বসময়ে সাফল্যের জন্য সবচেয়ে অনুপ্রাণিত করার মতো বই। যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বনামধন্য মনস্তাত্বিক লেখক এবার বিশ^ জগতের সামনে তার নতুন দর্শন প্রচার করেছেন কীস টু সাক্সেস্ বইয়ে। এই বইতে সাফল্যের ১৭টি নীতি ও দর্শন তুলে ধরেছেন। পাঠক যেসব প্রেরণা ও আত্মশক্তির যোগান পাবে : * সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের উন্নতি সাধন করতে সাহায্য করবে। * ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার অসীম প্রেরণা দেবে। * নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চ‚ড়ান্ত লক্ষ্যের প্রতি ধাবিত করবে। * সময় এবং শক্তিকে সুসংগঠিত করতে সাহায্য করবে। * লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে সৃষ্টিশীল হতে প্রেরণা দান করবে। * বাজেট করতে ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে অসীম শক্তি যোগাবে। * ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও উন্নত ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করবে। * সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং সুঅভ্যাসের সাহায্যে সফলতা অর্জনে সহায়তা করবে। * এছাড়া ব্যক্তিত্ব গঠন ও সুখীজীবনের সন্ধান দেবে। নিজেকে সবার সামনে মেলে ধরতে, মানসিক জ্ঞান বুদ্ধির চর্চা করতে এবং আত্ম-বিশ্লেষণ করার মত শক্তি যোগাবে। এছাড়াও কৌশল অবলম্বন করতে, পরামর্শ গ্রহণ ও প্রদানের ক্ষেত্রে অবশ্যই দৃঢ়তার সাথে কথা বলতে শেখাবে। আপনার মত প্রকাশের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সমৃদ্ধি ঘটাবে। নেপোলিয়ন হিলের কীস টু সাক্সেস্ সেই পথই নির্দেশ করে, আপনার সফলতার জন্য যে পথের সন্ধান প্রয়োজন।
আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা অলিভার নেপোলিয়ন হিল আত্মোন্নয়নধর্মী রচনা লেখকদের মাঝে প্রথমদিককার একজন। ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সফলতা লাভের বিভিন্ন দিক লেখনীতে তুলে এনে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল আত্মোন্নয়নমূলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হিলের। নেপোলিয়ন হিলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট ভার্জিনিয়ায় ২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ সালে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ল'স্কুলের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। এর আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে, সেই ১৩ বছর বয়স থেকে। ১৯০৮ সালে এন্ড্রু কার্নেগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হিলের জীবনে আসে বিশাল পালাবদল। তখনকার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি কার্নেগী তাকে পরামর্শ দেন ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে ও তাদের সাফল্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে। এরপর তিনি বিশ্ববিখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এই তালিকায় আছেন হেনরি ফোর্ড, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলসহ আরো অনেকে। এমন ৪৫টি সাক্ষাৎকারের লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম রচনা 'দ্য ল অব সাকসেস'। এই বইয়ে তিনি সাফল্যের সূত্রকে ব্যখ্যা করেছেন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, পুঁজিবাদের সমন্বয়ে মূর্ত দর্শন দিয়ে। নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ সাফল্যগাঁথার চেয়ে সাফল্যের পেছনের সূত্র সহজীকরণের পাথেয় হিসেবে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিখ্যাত এই লেখকের চরিত্রের কিছু রহস্যময় বৈশিষ্ট্য মানুষকে ভাবিয়েছেও বটে। তিনি দাবি করতেন, আত্মাদের সাথে তাঁর যোগাযোগ আছে, তাঁকে দেয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাফল্যের মন্ত্র। হিল এই বিষয়টি তাঁর ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বই 'গ্রো রিচ(!) উইথ পিস অব মাইন্ড' এ খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর জীবনের অজানা কিছু অধ্যায় উঠে এসেছে গবেষকদের চোখে। তবে নেপোলিয়ন হিল এর বই সমগ্র বিতর্কিত ব্যক্তিজীবনের প্রভাবেও জনপ্রিয়তা হারায়নি। তাঁর রচিত 'থিংক এন্ড গ্রো রিচ' সর্বকালের সেরা আত্মোন্নয়নমূলক দশটি বই এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ হলো 'অ্যাটিটিউড মেন্টাল পজিটিভা', 'দ্য মাস্টার কি টু রিচেস', 'সাকসেস হ্যাবিটস' ইত্যাদি। বিতর্কিত চরিত্রের এই লেখক ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর বেশ রহস্যজনকভাবে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি পারকিনসন্স সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন।