ইট দ্যাট ফ্রগ বইতে ‘ফ্রগ’ বা ‘ব্যাঙ’ বলতে বোঝানো হয়েছে কাজের অলসতা কিংবা গড়িমসি। যেসব অলসতা কিংবা গড়িমসি আপনার জীবনকে সফলতা থেকে দূরে রেখেছে। মূলত সুখ, সন্তুষ্টি হলো সফলতা। আবার ব্যক্তিগত ক্ষমতার চমৎকার অনুভূতি এবং ইফেকটিভনেসের আপনার চাবিকাঠি হলো প্রতিদিন কাজ শুরুর আগে প্রথমেই ব্যাঙ খেয়ে নেয়ার অভ্যাস। এটি একটি শেখার মতো স্কিল, যা রিপিটেশনের মাধ্যমে শেখা যায়। যখন সবকিছুর আগে আপনি আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবেন তখন আপনার সফলতা নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর তা তখনই সম্ভব যখন আপনি আপনার গড়িমসি দূর করতে পারবেন। অর্থ্যাৎ আপনার অলসতার ব্যাঙকে খেয়ে ফেলতে পারবেন। এই বইতে গড়িমসি দূর করার এবং দ্রুত অধিক কাজ সম্পন্ন করার ২১টি পন্থার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। এসব বিভিন্ন বিধি এবং নিয়ম সেখানো হয়েছে যেন আপনি তা বা¯ব জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন। এতেই আপনার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে। একটি দারুন সময়ে আমরা বেঁচে আছি। লক্ষ্য অর্জনের অনেক অনেক সম্ভাবনা, এত এত সুযোগ আজকের মতো আর কখনো ছিল না। মানব ইতিহাসে কখনো কাউকে এভাবে আর এত বিকল্পে বেঁচে থাকতে হয়নি। বাস্তবে এত এত ভালো কাজ রয়েছে: যে কাজগুলো করে দেখানোর এবং এসব করার যোগ্যতাও আপনার পুরোপুরি আছে। কিন্তু আপনি এসব করতে পারছেন তো? আপনি হয়তো অন্যদের মতো হতাশা এবং কি করবেন তা বুঝতে না পেরে ভাবছেন যে, এত কিছু করার আছে কিন্তু সময় তো নেই। আপনি এগুলো কাজগুলো শেষ করার জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। নতুন নতুন কাজ ও দায়িত্ব স্রোতের মতো আপনার সামনে ঘুরছে। কিন্তু সত্য এটাই যে, আপনি কখনো সবকিছু করতে পারবেন না। আপনি কখনো এগুলোর নাগাল পাবেন না। আপনার কাজ ও দায়িত্ব পেছনে পড়ে যাবে। আর এটা অনেকেরই হয়। আপনারও তাই হবে। তাহলে এসবকে কাটিয়ে উঠবেন কিভাবে। সহজ উত্তর হলো রোজ নিয়ম করে ব্যাঙটিকে খেয়ে ফেলুন।
ব্রায়ান ট্রেসি একজন কানাডিয়ান-আমেরিকান বক্তা এবং আত্মোন্নয়নমূলক রচনা লেখক। তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' নামক সংস্থার চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ ও বিকাশে সহযোগিতা এবং সার্বিক উন্নয়নে কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা। ব্রায়ান ট্রেসি নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মান, লক্ষ্য, কৌশল, সৃজনশীলতা এবং সাফল্য- মনোবিজ্ঞানের এই শাখাগুলোর তাৎপর্য অনুধাবনের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জনপ্রিয় এই বক্তার জন্ম কানাডার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে, তারিখটা ১৯৪৪ সালের ৫ জানুয়ারি। পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা থেকে। ১৯৮৪ সালে কানাডার ভ্যানকুভারে তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' প্রতিষ্ঠা করেন। তার ৪০ বছরের বেশি কর্মজীবনে তিনি প্রায় ১,০০০ এরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছেন, এবং প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। কানাডা, আমেরিকার বাইরেও প্রায় ৭০টি দেশে তার প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ব্রায়ান ট্রেসি এর বই এবং তার আলোচনার ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সারা বিশ্বের কর্পোরেট ও ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোক্তা তরুণদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তিনি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ও বিক্রিত ' সাইকোলজি অব এচিভমেন্ট'সহ প্রায় ৫০০টিরও বেশি অডিও ও ভিডিও প্রোগ্রাম তৈরি ও প্রযোজনা করেছেন, যা ২৮টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমগ্র হলো 'দ্য ২১ সাকসেস সিক্রেটস অব সেল্ফ মেইড মিলিওনিয়ারস', 'টাইম ম্যানেজমেন্ট', 'ইট দ্যাট ফ্রগ!', 'চেঞ্জ ইয়োর থিংকিং চেঞ্জ ইয়োর লাইফ', 'লিডারশিপ', 'কিস দ্যাট ফ্রগ', 'নো এক্সকিউজ : দ্য পাওয়ার অব সেল্ফ ডিসিপ্লিন' ইত্যাদি। ট্রেসির লেখা বইগুলো তার অনুপ্রেরণা জোগানো বক্তব্যগুলোর মতই আকর্ষণীয় ও শিক্ষণীয়। কর্পোরেট ম্যানেজমেন্টের জগতে আত্মোন্নয়নমূলক পন্থা বাতলে তরুণদের কাছে ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমূহ বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।