কুরআনের ভালবাসার গল্পগুলো চিরন্তন, অভিনব, চিত্তাকর্ষক ও সর্বোপরি জ্ঞানগর্ভ। এ গল্পগুলোতে রয়েছে আল্লাহতায়ালার প্রিয় বান্দাদের তাঁর প্রতি ঈমান, নিরঙ্কুশ ভালোবাসা ও প্রশ্নহীন আনুগত্য। আর কাফির, মুশরিক ও নাফরমান বান্দাদের চরম, উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। আরও রয়েছে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের প্রকৃত পন্থা ও ধৈর্য ধারণের অনুপম দৃষ্টান্ত। ইসলাম দিয়েছে পরিবার ব্যবস্থার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব। পরিবার সৃজনের পূর্বে একজন নারী ও পুরুষের সম্পর্ক, পরিবারে স্বামী ও স্ত্রীর, সন্তান-সন্তুতির প্রতি বাবা-মায়ের পারস্পরিক ভালোবাসার প্রকৃত স্বরূপ, প্রকৃতি ও মাত্রা কী হবে তা এ গল্পগুলোর চরিত্রগুলোর আচরণের মধ্য দিয়ে প্রতিভাত হয়েছে। ইউসুফ (আ.), আইয়ুব (আ.), মুসা (আ.), ইব্রাহীম (আ.), আছিয়া, মরিয়ম, রহিমা, দাউদ (আ.), নূহ (আ.), লুকমান (আ.) ও অন্যান্য চরিত্রগুলোকে ঘিরে আবর্তিত ঘটনাবলী এবং তাদের অনুসৃত কর্মপন্থার মধ্যে আমরা আমাদের জীবনের বিভিন্ন সমস্যাক্লিষ্ট কষ্টকর সময়গুলোতে পেয়ে যাব সরল-সঠিক পথে চলার দিশা। এ গল্পগুলোতে একটা বিষয় দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়েছে যে, নারী-পুরুষ, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্তুতি ও বাবা-মায়ের পারস্পরিক ভালোবাসার সম্পর্ক তাদের প্রকৃত সীমার মধ্যে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত এ সম্পর্কগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বা না যাওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র মানদন্ড হবে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি। যখন এ ধরণের কোন সম্পর্ক আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি থাকবে না তখন সে সম্পর্কে সঙ্গে সঙ্গে ইতি টেনে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করতে হবে। কেবল এ মানদন্ডে অবিচল থাকার মাধ্যমে এসব সম্পর্কের ভিতরে সবধরণের সীমালঙ্ঘন বা বাড়াবাড়ি পরিহার করা সম্ভব হবে। আর একজন আল্লাহতায়ালার রহমত প্রাপ্ত প্রকৃত চরিত্রবান মুসলিম নর-নারী, স্বামী-স্ত্রী, বাবা-মা হিসেবে গড়ে ওঠা সম্ভব হবে। কুরআনের গল্পগুলো পড়ে যদি মুসলিম তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী ও বয়োবৃদ্ধ নর-নারীগণ তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের বিভিন্ন স্তরে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার গ্রহণযোগ্য মাত্রা ও সীমার মধ্যে থেকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে সুন্দর ও কল্যাণময় পার্থিব জীবন যাপন করতে পারে, একই সাথে তৈরী করতে পারে মৃত্যুর পর চিরসুখের জান্নাত লাভের পথ তাহলে আমার এ চেষ্টা একটু হলেও সফল হবে আমার বিশ্বাস।