“এক মিলেনিয়াম আগের গল্প" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ দুই ভাই- শিশির ও তুষার। বাবা মায়ের আদরে শাসনে মানুষ। নিয়মে আবদ্ধ জীবন, কিন্তু বয়সােচিত স্বাভাবিকতায় নিয়ম ভাঙার ইচ্ছেটাই প্রবল। নতুন নতুন চিন্তা খেলে যায় মাথায়, কিছু তার খরচ করা যায়, কিছু থাকে জমা। চেনাজানা পৃথিবীর বাইরেও কোন এক আলাদা জগতের বাসিন্দা তারা। নিজেদের রাজা তারা নিজেই। এদের সাথে সহপাঠী সাগরিকা হাই স্কুলে ক্লাস নাইনের এক ঝাক ছেলেমেয়ে। তাদের পরিচয়, বন্ধুত্ব, খুনসুটি আর বুদ্ধির। লড়াইয়ের আখ্যান এই উপন্যাস। আলাদা পরিবার থেকে এসেছে সবাই। তবু কোথাও ওরা এক। প্রত্যেকেই বিশেষ; কেউ ভীষণ ভালাে ছাত্র, কারাে সিলেবাসের গণ্ডির বাইরেও দারুণ লেখাপড়া, অংকে তুখােড় কেউ বা, কারাে সাংগঠনিক ক্ষমতায় চমকিত হতে হয়। ক্লাস পরীক্ষার গবাঁধা জীবনের বাইরেও তাদের বাবা, মা, আত্মীয়-অনাত্মীয় মিলিয়ে এক একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। নৌ বাহিনির তত্ত্বাবধানে থাকা রাজধানীর সাগরিকা হাই স্কুল চলে কড়া নিয়মকানুনে। শিক্ষক, ছাত্র, কর্মচারী, এমনকি স্কুল চত্বর পর্যন্ত নিয়মের মধ্যে থাকাটাই এখানে সৌন্দর্যের আরেক নাম । কিন্তু এই শৃঙ্খলার মধ্যেও একদিন ঘটে অঘটন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চুরি? তাও এত কড়াকড়ির মধ্যে? বিদ্যালয় প্রধান মুষড়ে পড়েন। কারণ এর সাথে শুধু টাকা নয়, স্কুলের মানসম্মান জড়িত। চোখে অন্ধকার দেখতে থাকেন তিনি? কাকে সন্দেহ করবেন? কোথা থেকে শুরু করবেন তদন্ত? সমস্যার সমাধান না হলে রাষ্ট্রপ্রধানের সামনেই পড়তে হবে লজ্জায়! এই সময় এগিয়ে আসে দুর্দান্ত কিশাের, কিশােরীর দল । প্রতিষ্ঠানের সম্মান রাখতে মাঠে নেমে পড়ে ওরা। শিশির, তুষার, কামরুন্নেসা, নাজিয়া, নাজমা, নাদিয়া, সাদেক, জাহিদ, মনির সহ নীরব-সরব ছেলেমেয়েরা। খেলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযােগিতায় একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও দুঃসময়ে সবাই দাঁড়ায় একে অন্যের পাশে। প্রত্যেকে তার নিজের দক্ষতা কাজে লাগায় এবার । কেউ বুদ্ধি খাটায়, কেউ তার নেতৃত্বের গুণে ভীষণ সাহসী হয়ে ওঠে, বইয়ের পােকা হওয়াটা কাজে লেগে যায় কারাে। জট খােলে রহস্যের ।। রােমাঞ্চকর সংকট উত্তরণের পাশাপাশি কৈশােরের স্বভাবসুলভ চলনের ছবি এঁকেছেন লেখক। চরিত্রগুলােকে দেখেছেন নানা চোখে, উল্টে পাল্টে, বহুমাত্রিক কৌশলে । দেখিয়েছেন মানব মনের সরল-বন্ধুর পথ। মানুষের গল্প হলেও এটি সময়ের গল্প। বর্তমানে বসে ঘুরে ফিরে দেখা আরেক জীবনের গল্প।