ভূমিকা আমি ছাত্রাবস্থায় নিয়মিত ইসলামিক বইপত্র পড়াশুনা করতাম। এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ শহরের ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে গিয়ে পড়াশুনা করতাম। আমি আস্তে আস্তে ইসলামিক চিন্তাবিদ ও বিশেষ করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী ও কার্যক্রমের উপর বিশেষ অনুরাগী হই। আমার দৃষ্টিতে রসূলে করীম (সাঃ) একজন বড় মাপের দার্শনিক। তাঁর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে উনার (দঃ) মহান ব্যক্তিত্ব ও দার্শনিক চিন্তাচেতনা আমাকে আকৃষ্ট করে। তাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও মহাজ্ঞানী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে লেখার প্রয়াস নিয়েছি। আশা করি এই বইটি পড়ে সাধারণ পাঠক উপকৃত হবেন এবং ইসলাম সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণার অবসান ঘটবে। দর্শন হলো পরমসত্তা বিষয়ক অনুসন্ধান, একথা যেমন একটি দার্শনিক উক্তি তেমনি পরমসত্তা বিষয়ক অনুসন্ধানমাত্রই অর্থহীন, একথাও একটি দার্শনিক উক্তি।
এ থেকে বোঝা যায়, যে বিষয়টিকে আমরা দর্শন বলে অভিহিত করি তার পরিধি খুবই ব্যাপক এবং যাদের দার্শনিক বলে অভিহিত করি এরা স্বরূপতই উদার দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী। প্রকৃত প্রস্তাবে দর্শন ও দার্শনিক স্বরূপত তাই। এই অর্থে জ্ঞানার্জনের যে কোনো বিষয়ই দর্শন আর জ্ঞানার্জনের সাথে জড়িত যে কোনো ব্যক্তিই দার্শনিক আখ্যায় আখ্যায়িত। তাই সমাজতত্ত্ব, অর্থনীতি, রাজনীতি, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, কৃষিশাস্ত্র, আইনবিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য ও সমালোচনা প্রভৃতি সবই দর্শন এবং এদের সাথে সম্পৃক্ত সকল মনীষী ই দার্শনিক হওয়ার যোগ্য। দর্শনের এই ব্যাপকতার কারণেই বোধকরি যে কোনো বিষয়ে গবেষণা করলে আজো ‘ডক্টর অফ ফিলসফি’ বা দর্শন পন্ডিত উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাই দর্শন প্রকৃতই একটি ব্যাপক বিষয়, দার্শনিক প্রকৃতই উদারচিত্তের অধিকারী। আমরা হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর জীবনী ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করলে উনাকে দার্শনিক সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করতে পারি।
এই বইটিকে আরও সুন্দর ও কল্যাণকর করে তুলতে বিজ্ঞজনদের পরামর্শ ও সমালোচনা সানন্দে গ্রহণ করব। পরিশেষে সফলের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করে শেষ করছি। জ্যোতিষ শাস্ত্রী ড. শেখর রায়
সূচি * অবতরণিকা * মুসলিম দর্শনের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি * চিকিৎসা বিজ্ঞানে হারানো সুন্নাত * ‘মদীনা সনদ’ সম্প্রীতির সামাজিক চুক্তি ও দর্শন * ইসলামী আইনে বিচারের মানবিক দিক * চিন্তা চেতনার উন্নয়ন * স্রষ্টা এক ও অভিন্ন * মানব জন্ম প্রক্রিয়া * মক্কী জীবনের চার স্তর * আবিসিনিয়ায় হিজরত * হযরত উমর (রা) এর ইসলাম গ্রহণ * মহানবীর জীবন ও বাণী বৈশিষ্ট্য * জনক জননী ও জাতকের সম্পর্ক * সামাজিক বিপ্লব * ক্রীতদাস প্রথার অবসান * চৌর্যবৃত্তি, হত্যা, মদ্যপান * নৈতিকতাবোধের উজ্জীবন * মানুষের প্রতি কর্তব্য * অহঙ্কার ক্রোধ ধৈর্য ক্ষমা * শ্রমের মর্যাদা দান * ব্যবসা ও ভিক্ষাবৃত্তি * বিলাসিতা ও আড়ম্বরহীন জীবন * বলিষ্ঠ জীবনবাদ * জ্ঞান শিক্ষা * দুঃখ বিপদ * ধন সম্পত্তির লালসা * সহায়ক গ্রন্থাবলী