১৯৫২ সালে নিজ ভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে রাজপথে রক্ত দিতেও কুন্ঠাবোধ করেনি এ দেশের মানুষ। মায়ের ভাষার প্রতি এই আত্মত্যাগের গর্বিত মালিক শুধু বাঙালি জাতি; পৃথিবীর আর কোনো দেশের মানুষ এই অহংকার করতে পারে না। প্রশ্ন আসতেই পারে, যে ভাষার জন্য নিজের জীবনকে বিসর্জন দিলাম, সে ভাষার মর্যাদা কতটুকু রাখতে পারছি আমরা? পারিনি, চেষ্টাও করছি না। সরকারিভাবে সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। আমরা প্রতিদিন ভুল বানান, ভুল বাক্যগঠন করছি হরহামেশা। বেতার, টেলিভিশনে শুদ্ধ বানান উচ্চারণে ভুল, সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ভুল শব্দপ্রয়োগ, ভুল বানান, ভুল বাক্যগঠন...। সব জায়গায় শুধু ভুলের পাহাড় জমেছে। বাংলা একাডেমি ছাড়াও লেখক, প্রকাশক এর দায় স্বীকার করে। আর কারও যেন কোনো মাথাব্যথা নেই। তবে কারও-কারও দায় এসে যায়। সমাজে সে ধরনের লোক কম হলেও দু-একজন বাজি ধরতেই পারেন যে, বাংলাভাষা নিজে শুদ্ধ করে লিখবেন এবং অপরকেও উদ্বুদ্ধ করবেন। তেমনি একজন মানুষ সঞ্জয় মুখার্জ্জীÑযিনি অনলাইন মিডিয়াসহ সর্বত্র চেষ্টা করে যাচ্ছেন শুদ্ধভাবে বাংলা লিখতে। তার এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি ২০২০ বইমেলায় প্রকাশ করেছিলেন ‘ছন্দে লিখি বানান শিখি’ বইটি। বইটির ব্যাপক চাহিদার পর ২০২১ সালের বইমেলায় তিনি বানান বিভ্রাট নিয়ে প্রকাশ করেছেন ‘দুরন্ত সংলাপ’ বইটি। ব্যাকরণকে বাদ দিয়ে শুধু বানান শেখার এমন বই বাংলাভাষায় আর দ্বিতীয়টি আছে বলে আমার মনে হয় না। আশা করছি ‘দুরন্ত সংলাপ’ বইটিও ‘ছন্দে লিখি বানান শিখি বইয়ের মতোই পাঠকপ্রিয়তা পাবে। বই দুটি প্রকাশ করেছে জলছবি প্রকাশন।
সঞ্জয় মুখার্জ্জী একাধারে কবি, গল্পকার ও শিশু সাহিত্যিক। জন্ম ১৮ জানুয়ারী ১৯৬৭, যশোর। লেখালিখি শুরু শৈশব থেকে। দেয়াল পত্রিকা, স্কুল ম্যাগাজিন ও স্থানীয় সংবাদ পত্রিকার সাহিত্য পাতায় তার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তীতে তার বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটেছে যশোরে সাংষ্কৃতিক পরিম-লে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর মাধ্যমে । বর্তমানে ঢাকায় বসবাস এবং সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিটি ওয়াইড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন-এফএসএম সাপোর্ট সেল-এ।