মহান অতীন্দ্রিয়বাদী সুফিগুরু এবং মরমী কবি জালালউদ্দিন রুমি ১২৭৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ছেষট্টি বৎসর বয়সে দক্ষিণ তুরস্কের কোনিয়ায় সূর্যাস্তের সময় যখন দেহত্যাগ করেন, তখন তাঁর জীবনের প্রায় তিরিশ বৎসর বয়সে প্রবুদ্ধ জীবনের জ্যোতির্ময়তায় অতিবাহিত হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে তিনি ৩৫০০০টি গাঁথা ২০০০টি চতুষ্পদী এবং মহাকাব্য ‘মসনবি’ রচনা করেছিলেন, সুফি ধারার মাওলাইয়াত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর জীবন-দর্শন এবং রচনার মাহাত্ম্য তাঁর পুত্র সুলতান ওয়ালাদ এবং অন্যান্য উত্তরসূরির নেতৃত্বে মুসলিম বিশ্বের বিশাল অঞ্চলে ছড়িয়ে গিয়েছিল, যা আলজিয়ার্স থেকে কায়রো, লাহোর এবং সারাজেভো থেকে প্রত্যন্ত আফগানিস্তান, তুরস্ক, ইরান এবং ভারতের গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তাঁর মৃত্যুর কয়েক শতাব্দী পরে এবং ইসলামের ইতিহাসের অনেক উত্থানপতন এবং বিয়োগান্ত ঘটনার পরও রুমি রচিত গাঁথাসমূহ তীর্থযাত্রীদের দ্বারা এবং ধর্মীয় সমাবেশে পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে গীত হয়ে আসছে। রুমি বলেন, সন্ধানী হচ্ছে সে যে খুঁজে পায় প্রেমাস্পদকে, কারণ প্রেমাস্পদই প্রেমিকে পরিণত হয়। খোদার অভিপ্রায় ছিল যে, শামস্ কেবলমাত্র তাঁর নিকট প্রতিভাত হবেন এবং কেবলমাত্র তাঁর জন্যই হবেন। তিনি তাঁকে দেখলেন যিনি দৃষ্টিগোচর হন না, তিনি তাঁকে শ্রবণ করলেন যিনি পূর্বে শ্রুত হন নাই। তিনি তাঁর সঙ্গে ভালোবাসায় আবদ্ধ হলেন এবং তাঁর বিলয় ঘটল। মাওলানা রুমিকে বলা হয়ে থাকে প্রেমিকজগতের প্রবাদ পুরুষ। তাই তাঁর রচিত সমস্ত প্রেমতত্ত্বমূলক দিওয়ান সমূহের তাত্ত্বিক ভেদমূলক গ্রন্থ প্রেমতত্ত্ব অধ্যয়ন করে পাঠক-ভক্তগণ খুঁজে পাবেন সত্য পথের সন্ধান।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।