ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা কবিতা রেখা আমার কাছে বিশেষ কিছু ব্যাপার মনে হয় না। কেউ ঘুড়ি ওড়ায় কেউ কাঠ চাঁছে কেই রান্না করে কেউ খায় কেউ হাগে ও মোতে কেউ গড়গড়া দ্যায় এরকমই বা কেউ পদ্য ল্যাখে। মানুষের মৌলিক ঘটনাগুনের একটি। আসলে শিল্পটিল্প নিয়ে কচকচানি আমি সহ্য করতে পারিনা বলেই লোক সমাগম থেকে দূরে থাকি। তো পুরো ব্যাপারটাই খুব সাধারণ ও সহজাত এবং তা আবহমান গ্রন্থি থেকে গ্রন্থিতে ও বিষয় থেকে বিষয়ান্তরে বিরাজমান। সবকিছু মিলিয়ে একটািইনডিভিজুয়্যাল টোটালিটি তৈরি হয়। বা বিষয় ও উৎস নিরপেক্ষ। আর মানুষ ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। সে তাতে নিমজ্জিত থাকে। সে পারে কেবল নিজের ইন্দ্রিয় ও মানসে একটা প্রতিরূপ কল্পনা করতে। মানুষ যে বাস্তবতার মধ্যে প্রবাহিত তা নিরবচ্ছিন্ন এক Matter of Fact আর সে শুধু কতকগুলো কাকতলীয় প্রতিরূপ গড়ে তুলতে পারে এবং প্রক্ষেপিত হ’লে এইভাবে Matter ও Anti Matter। প্রক্রিয়ায় বিদূরিত ও ক্রমান্বয়ময় এক ধ্রুব কল্পোক লাভ করে। এতে সবকিছুই উদগারিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে আসে। এই ভাবে গড়ে ওঠে সভ্যতার ইটগুলি আর এই প্রবণতা এমনকি পরমাণু পার্যায়ে প্রকাশিত। ক্রমান্বয়শীল ক্ষণসমূহের সোচ্চার মোজেইক বিম যা লম্বিত ও প্রলম্বায়িত। খুবই মোটেন্টারি ফ্যাক্ট নিয়ে নিয়ে আমাদের ম্যাটার অব ফ্যাক্ট ক্রিয়াশীল। ফলে মানুষ যা লাভ করে তা সবই আপাত ও গড় ফলাফল সামগ্রিক। বিষয়টি এক্সাট্রিম। আর আমি একটি মাত্র প্রশ্ন ‘আমি কী? জানিনা জন্যেই এটা সেটা করি লিভি ইত্যাদি। শামীম কবীরের ডায়েরি থেকে
সূচিপত্র *এপ্রিল *আরো এক টুর্নামেন্ট *গোলাপী ও ছাদের ওপর জন্মদিন *আরো একটি চাঁদ *মরীচিকা পাঠ *নভেরা *কাঁপন *পৈত্র *বৃষ্টির দিনে *নিশিন্দারা *রেডিয়োতে গান *তিন ছাড়া অন্য সংখ্যা কিছু নয় *মা’র সঙ্গে বাক্যালাপ *ভোরবেলার স্বপ্ন নিয়ে ভাসা *মুক্তি *জুয়া *একটি নোম্যান্স্ল্যান্ডের স্বপ্ন *পঙ্খীরাজ ও আমার বান্ধব্য *শীতের পোশাক *গন্ধদুহিতা *মিনিবাস ঘরে ঢোকার পর *দরিদ্রতা ও রাজনীতি *পথায়ন *কিন্তু *হে দরোজা *উভরিঙ্গ লাল জামা *রেগশয্যার আলোবাদ্য *পিয়ানো ব্যাধ *হিজড়ে *সমকাম *ওম লাগানো হাড় *দেহ পেয়ে গাইবার জন্য গান *দ্বীপ *আবাসন *উভলিঙ্গ ফুল *প্রেত যখন নাইছে *অশুভ গাছ *কচ্ছপের খোলার নিচে *ভ্রষ্ট নক্ষত্রবাসী *গদ্যটির নাম ঘনত্ব *স্বপ্নের মধ্যে *নক্শা *একমুখী ব্রীজ *গজারি গাছ *আতপ চাঁদ *জ্ঞানী ও পাঁচ বালক *গড় *একটা দুটো তারা ঝ’রছে এরকম দিন *শামুক *যে কোনো বিষয়ে বেশ লেখা যায় *দেহ *মুখে মৃদঙ্গের বাঁক *স্রোতে-সান্ড্রা! *আমাদের ঘর *চোর *একজন আস্তিকের স্মৃতি *ত্রিসিংহ *ফসিল-১ *ঘুম *আরেকবার মরীচিকা *মালিনীকে জল তুলে দিতে হলে *প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী *স্মৃতিগুলি বিস্ময়ের *সিংহ ঋতু *ডাকগাড়ি *আমার ঘর *বাঁধ *নাও *প্রতি *অতিথি *বায়ূঘর্ষ *ফাঁকা *সকল সুখের প্রলেপ *হানাবাড়ি *এক সকালের পত্রাঘাত *কান্না *প্রিয়তমাসু *শাঁস *নিদমহল *বিবরে সূর্যাস্ত *যে চাঁদ *স্রোত ও শামুকাসন *এইখানে থামো ট্রেন *ও চাঁদ *ফল *চোখ *জাল *ভাঁজ *ঊন সংসার *অজলা *মনে হচ্ছে যাচ্ছে রেল *ক্ষুধা উৎযাপন *রানা-২ *মেয়েদের দাঁত *ফুঁ *রাত *ছায়া *স্বীকারোক্তি, ইকারুস *সেই সবজে বিকালে *মশলা-ঘরে মৃত্যু ভালো *অর্দ্ধ/অর্ধ *ম্যানসাইজ আরশি কিংবা আত্মহত্যা
Shameem Kabir- জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল বগুড়ার কাহালু গ্রামে নানাবাড়িতে। শৈশব থেকেই শামীম কবিতা অনুরাগী। রংপুর ক্যাডেট থেকে মাধ্যমিক এবং রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর প্রথাগত পড়ালেখার প্রতি অনীহার কারণে একাডেমিক পড়াশোনার সাথে সম্পর্ক-ছেদ ঘটে। কিছুদিন বিরতির পর বগুড়ার আজিজুল হক কলেজে গ্রাজুয়েশনের জন্য ভর্তি হলেও তা শেষ করেননি এবং সেসময়ে লেখালেখির সাথে আরও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত সময়ে লিটল ম্যাগাজিন-কেন্দ্রিক ঢাকার সাহিত্য জগতের সাথে শামীম প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। নদী, প্রান্ত, দ্রষ্টব্য, রূপম, একবিংশ ইত্যাদি লিটল ম্যাগাজিনে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতো। ব্যক্তিগত জীবনে শামীম খুব শান্ত প্রকতির হলেও ভেতরে ভেতরে ছিলেন প্রচণ্ড অস্থির ও বোহেমিয়ান সত্তার অধিকারী। শামীমের কবিতা নব্বই দশকের অন্যতম বৈশিষ্ট্যসূচক। নিজস্বতায় ঋদ্ধ নাগরিক ব্যক্তিরÑনৈঃসঙ্গ্য, যন্ত্রণা, চারিত্রিক বহুত্বতা, মনস্তাত্ত্বিক ব্যাধি আর বিচ্ছিন্নতাবোধের চর্মহীন কঙ্কাল যেন শামীমের কবিতা। লেখার পাশাপাশি শামীম ছবি আঁকতেন এবং চমৎকার গান গাইতেন। ১৯৯৫ সালের ২ অক্টোবর বগুড়ায় নিজ বাড়িতে শামীম আত্মহত্যা করেন।